ক্ষুব্ধ পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তির পরে রোগীর ‘সিটি স্ক্যান’ পরীক্ষা করাতে বিপাকে পড়েছেন পরিজনেরা, অভিযোগ উঠল কাটোয়ায়। রোগীর পরিবারের দাবি, ওই পরীক্ষা না হওয়ায় চিকিৎসা কার্যত শুরু করা যায়নি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেন নির্দিষ্ট কেন্দ্রে পরীক্ষাটি হচ্ছে না, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কাটোয়ার কুরচি গ্রামের বাসিন্দা, বছর চল্লিশের রিক্তা মণ্ডলের শনিবার সকালে বাড়িতে স্ট্রোক হয়। তাঁকে সে দিনই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ইসিজি, রক্তপরীক্ষা করানো হয়। চিকিৎসক শীঘ্র সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেন। রিক্তাদেবীর দেওর দীপেন মণ্ডল জানান, সে জন্য তাঁরা রোগীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে হাসপাতালের রোগী সহায়তা কেন্দ্রে গেলে সেখানকার কর্মীরা জানান, এই পরীক্ষা হাসপাতালে হয় না। সে জন্য নির্দিষ্ট একটি বেসরকারি পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে বলা হয়।
দীপেনবাবুর অভিযোগ, ‘‘কাছারি রোডের ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে জানানো হয়, এই কার্ডে সিটি স্ক্যান হবে না। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে গিয়েছিলাম। তবে তিনি তখন হাসপাতালে না থাকায় জমা দিতে পারিনি।’’ রিক্তাদেবীর মেয়ে সাথী মণ্ডলের দাবি, ‘‘মা বছরখানেক আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে তা কোনও কাজেই এল না। আমরা টাকা খরচ করে ‘সিটি স্ক্যান’ করাতে না পারায় দু’দিন ধরে মা কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়ে রয়েছে। প্রশাসন নজর দিলে ভাল হয়।’’
ওই বেসরকারি পরীক্ষা কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে রোগীর পরিবারের দাবি, ওই কেন্দ্রে গেলে তাঁদের জানানো হয়, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প বাবদ সরকারের কাছে তাঁদের বেশ কিছু বকেয়া টাকা পাওনা রয়েছে। সে জন্য এখন এই কার্ডে পরীক্ষা করানো বন্ধ রাখা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা (কাটোয়া) বিজেপি সহ-সভাপতি অনিল দত্তের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের সরকার গোড়া থেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে আসছে। বেসরকারি কেন্দ্রগুলি টাকা পায় না, তাই রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে।’’
কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “হাসপাতলে সিটি স্ক্যান যন্ত্র নেই, তাই বাইরে থেকেই করাতে হয়। কিন্তু ওই বেসরকারি কেন্দ্র কেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করেনি, খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার নবারুণ গুপ্তের বক্তব্য, ‘‘টাকা অনুমোদন হয়ে আসতে কিছুটা সময় লাগে। ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের তরফে বিল জমা দেওয়া হয়েছে, নিশ্চয় টাকা মেটানো হবে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ক্ষেত্রে কেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরীক্ষা করা হল না, খতিয়ে দেখছি।’’ জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের অবশ্য দাবি, কোথাও কোনও টাকা আটকে রয়েছে, এরকম হিসেব তাদের কাছে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy