প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’ চলাকালীন এপ্রিল মাস থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রায় সব পঞ্চায়েতেই একশো দিনের প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, মে মাসের কাজের নিরিখে জেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে যথাক্রমে কাঁকসার গোপালপুর ও বনকাটি পঞ্চায়েত। বারাবনির পানুড়িয়া পঞ্চায়েত তৃতীয় ও চতুর্থ হয়েছে রানিগঞ্জের রতিবাটি পঞ্চায়েত।
প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দিব্যেন্দু মজুমদার বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশমতো ২০ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু হয়েছে। এ বছর ৪৮ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ১০ জুন পর্যন্ত মোট ৫ লক্ষ ৪৯ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে ৩১ মে পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৯ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে।
কাঁকসা ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, গোপালপুরে ছ’টি নতুন পুকুর খোঁড়া, পাঁচটি ফলের বাগান ও ছ’টি সেচনালা খোঁড়ার কাজ চলছে। তাতে জেলায় সর্বাধিক ১,৪৭৩ জন কাজ করছেন। মে মাসেই ১৭,০২৪টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। বনকাটি পঞ্চায়েতে তিনটি পুকুর ও একটি সেচ-নালা তৈরির কাজ চলছে। তাতে ৮০৪ জন কর্মী কাজ করছেন। মে মাসে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ১৫,৩৩৩টি। গোপালপুর পঞ্চায়েত প্রধান জয়জিৎ মণ্ডল জানান, তাঁদের লক্ষ্য, এই আর্থিক বছরে ৭০,৭১২টি শ্রমদিবস তৈরি করা। বনকাটি পঞ্চায়েত প্রধান পিণ্টু বাগদি জানান, তাঁরা চলতি বছরে ১ লক্ষ ৩ হাজার ৪০১টি শ্রমদিবস তৈরি করতে চান।
এখনও পর্যন্ত কাঁকসা ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত জেলায় প্রথম থাকায় খুশি বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ‘‘কাজের চাহিদা ভালই রয়েছে। এক সঙ্গে প্রচুর কাজ চালু ও অনেক কর্মীকে নিয়োগ করায় দু’টি পঞ্চায়েতেই সাফল্য এসেছে।’’ ব্লকের অন্য পঞ্চায়েতেও এই ভাবে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুদীপ্তবাবু।
অন্য দিকে, বারাবনি ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পানুড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ন’টি পুকুর, বাংলা আবাস যোজনায় ১৫২টি বাড়ি তৈরি ও চারটি সামাজিক বনসৃজন করা হচ্ছে। তাতে ৩৮৯ জন কাজ করছেন। মে মাসেই ১৩,৮৪০টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। সারা বছরে ৫০ হাজারের বেশি শ্রমদিবস তৈরি করতে চান বলে জানিয়েছেন এই পঞ্চায়েত প্রধান আশিস মণ্ডল। কাজের গতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিডিও (বারাবনি) সুরজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম হওয়ার চেষ্টা করব।’’
তবে ভৌগোলিক পরিস্থিতি আগের পঞ্চায়েতের তুলনায় আলাদা রানিগঞ্জের রতিবাটি। এই পঞ্চায়েতের প্রধান সুরেন্দ্রপ্রসাদ নুনিয়া জানান, ন’একর জমিতে সাতটি পুকুর খোঁড়ার কাজ চলছে। তাতে ৮৫০ জন কর্মী মে মাসেই ১১,৯১৬টি শ্রমদিবস তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘রতিবাটি খনি এলাকা হওয়ায় জলের সমস্যা তীব্র। সেই সমস্যা দূর করতেই পুকুর খোঁড়ার উদ্যোগ।’’ রানিগঞ্জ ব্লক জুনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মিঠুন ঘোষ জানান, রতিবাটি পঞ্চায়েতে ৭০ হাজার শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্য রয়েছে।
প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ‘লকডাউন’-এর জেরে জেলায় অনেক শ্রমদিবস নষ্ট হয়েছে। তাই কাজে গতি আনতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দিব্যেন্দুবাবু জানান, লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কাজও এই প্রসঙ্গের যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। এতে তাঁদের যেমন আয় হবে, তেমনি শ্রমদিবসও সহজে পূরণ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy