সুনসান সোনাপট্টি। নিজস্ব চিত্র
একে ব্যবসায় মন্দা, তার উপরে পুজোর ‘পাওনা’ মেটাতে গচ্ছিত পুঁজিতে টান পড়ছে, দাবি করছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। বর্ধমানের সোনার গয়না প্রস্তুতকারক থেকে নামী দোকানের কর্ণধারদের দাবি, ব্যবসা ছন্দে ফিরবে কবে, কী ভাবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এখনও কিছু কারিগর দোকানে আসছেন ঠিকই, তবে পুজোর বোনাস পেয়ে গেলে বা পুজোর পরে ক’জনের দেখা মিলবে খুব চিন্তার। আয় কমায় বিকল্প পথ খুঁজছেন বহু কারিগরও।
ব্যবসায়ীরা জানান, দুই মেদিনীপুরের দাসপুর, নন্দকুমার, খেজুরি, মহিষাদল, হুগলির আরামবাগ, ডানকুনি এমনকি, বীরভূম, বাঁকুড়া থেকেও বর্ধমান শহরের বিভিন্ন দোকানে কাজের বরাত নিয়ে গয়না তৈরি করেন কারিগরেরা। অনেকের নিজস্ব কারখানাও আছে। কিন্তু বর্তমানে গয়না তৈরির কাজ এক প্রকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দোকান ছেড়ে গ্রামের পথ ধরেছেন অনেক ঠিকা কারিগর। কেউ মাছ বিক্রি করছেন, কেউ টোটো চালাচ্ছেন, কেউ ফেরি করছেন। এমনই এক কারিগর দাসপুরের সনৎ পড়্যা বলেন, “বংশ পরম্পরায় সোনার কারিগর হিসেবে বর্ধমানের দোকানে কাজ করি। ২০০৪ সালে এক বার বাজার পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বারের মতো টানা কয়েক মাস ধরে দোকান বন্ধের পরিস্থিতি হয়নি।’’ তাঁর দাবি, অনেকে কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
গয়না প্রস্তুতকারক একটি ‘কারখানা’র মালিক এনায়েত হোসেনেরও অভিযোগ, “কারিগরেরা ঠিকমতো কাজে আসছেন না। এখন বোনাস পাওয়ার আশায় মুখ দেখাতে আসছেন কয়েকজন। পুজোর পরে কত জন দোকানমুখো হবেন, বুঝতে পারছি না।’’
ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের দাবি, লোকসভা ভোটের পর থেকে বিক্রি কমতে শুরু করে। গত এক মাস ধরে বিক্রি প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। দোকানের দৈনন্দিন খরচ তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। এরই মধ্যে কর্মচারীদের পুজোর বোনাস দিতে হবে। তার জন্যে পুঁজি ভাঙতে হবে, দাবি তাঁদের।
শহরের সিংদরজার কাছে একটি গহনা দোকানের মালিক জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “পুজোর পরে অনেক ব্যবসায়ীকে দেখবেন সোনার বদলে ঝুটো গয়না বিক্রি করছেন। ইতিমধ্যে অনেক কারিগরই সোনার দোকান ছেড়ে পাড়ায় চায়ের দোকান, চপের দোকান খুলে বসেছেন।’’ আর এক ব্যবসায়ী প্রশান্ত সেন বলেন, “কারিগর নির্ভর দোকানের হাল খুবই খারাপ।’’
বিক্রিবাটা কমার পিছনে সাম্প্রতিক কালে গয়নাপট্টিতে চুরি, ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলমালের ঘটনার জেরও রয়েছে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ভয় থেকে স্থানীয় অনেক বাসিন্দা আসতে দ্বিধা বোধ করছেন। কয়েক বছর আগে এই এলাকায় দিনে-দুপুরে পরপর চুরি, প্রতারকদের উৎপাত বাড়ার অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ভাগ হওয়ার পরে নিজেদের মধ্যে গোলমাল, মারপিট এমনকি, রাস্তায় থাকা সিসি (ক্লোজ়ড সার্কিট) ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। বিবাদ পৌঁছয় থানাতেও। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, স্বর্ণশিল্পে মন্দা কাটাতে সমস্ত পরিস্থিতিরই বদল দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy