পুরস্কৃত। নিজস্ব চিত্র।
বয়স ১৪। তবে প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানো, নাবালিকা বিয়ে রোখার কাজে যে কাউকে টেক্কা দেবে সে। লকডাউন পর্বে এলাকায় নানাবিধ সামাজিক কাজেও তার জুড়ি মেলা ভার। অনেকের জীবনে আলো এনে রাজ্য সরকারের ‘বীরঙ্গনা’ পুরস্কার পেয়েছে বর্ধমানের নৌসিন পারভিন। শুক্রবার কলকাতায় ‘চাইল্ড প্রোটেকশন অ্যান্ড চাইল্ড রাইট কমিশনের’ তরফে ওই পুরস্কার দেওয়া হয় তাকে।
প্রতিবারই জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের তরফে মনোনীতদের নাম রাজ্যে পাঠানো হয়। এ বার পুরস্কার পেয়েছে বর্ধমান শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোদা খন্দেকর পাড়ার নৌসিন পারভিন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতী বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী ছোটবেলা থেকেই অন্যদের সাহায্য করতে আগ্রহী। বছর দুয়েক আগে ছোটদের নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয় সে। ওই সংস্থার উদ্যোগে পাড়ায় পাড়ায় শিশুদের জন্য গড়ে ওঠে ‘রেনবো ক্লাব’। সেখানকার সদস্য হয়ে এলাকার শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করে নৌসিন। লকডাউন পর্বে যে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা থেকে সরে যাচ্ছিল, তাদের ডেকে এনে খেলার ছলে বিনামূল্যে পড়াতে শুরু করে সে। চলে মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোয়ার পাঠ। পাড়ার কিছু প্রতিবন্ধী শিশুকেও অন্যদের কটূক্তি বা হেয় করার হাত থেকে রক্ষা করে লড়ার সাহস জোগায় সে। বাল্যবিবাহ রুখতেও ভূমিকা নেয়। ভাড়া বাড়িতে থাকা, দারিদ্র্য কোনও কিছুই পিছু টানতে পারেনি তাকে।
নৌসিন জানায়, বাবা দিনমজুর। মা-ও ওই সংস্থার হয়ে কাজ করেন। মাকে দেখেই অন্যদের পাশে দাঁড়ানো শুরু তার। ওই সংস্থার অর্জুনকুমার রায় বলেন, ‘‘ছোট থেকে প্রতিবন্ধী শিশুদের উপরে ওর টান। ওদের বাঁচার সাহস, লড়াই করার মানসিকতা তৈরি করে ও।’’ নৌসিনের মা রোজিনা খাতুন জানান, শত সমস্যার মধ্যেও মেয়ে ভাল কাজ করছে, এটাই তাঁদের গর্ব।
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত দু’বছরে এক জন ছেলে ও এক জন মেয়ে এই পুরস্কার পেয়েছে। আশা করি, এই ভাবে সমাজে সচেতনতা গড়ে উঠবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy