প্রতীকী চিত্র
স্টেশনের দিকে একটি অটোকে যেতে দেখেই ‘সন্দেহ’ হয়। এক সাব-ইনস্পেক্টর ও তাঁর সঙ্গীরা অটোটিকে দাঁড় করান। অটোয় থাকা তিন যাত্রী নানা প্রশ্নের ‘সদুত্তর’ দিতে না পারায় তাদের জিপে তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। অভিযোগ, সেই সময়েই এক দুষ্কৃতী সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপ পালের পিঠে গুলি করে। সোমবার ভোরে আসানসোল দক্ষিণ থানার স্টেশন রোড এলাকার ঘটনা।
আসানসোল দক্ষিণ থানা সূত্রে জানা যায়, এ দিন ভোর ৩টে ৪০ মিনিট নাগাদ আসানসোল স্টেশন রোড লাগোয়া ১৩ নম্বর রাস্তায় টহল দিচ্ছিলেন সন্দীপবাবু, কনস্টেবল অরিজিৎ সামন্ত এবং সিভিক ভলান্টিয়ার দুর্গা ক্ষেত্রপাল। জিপ দাঁড় করিয়ে সন্দীপবাবুরা স্টেশন রোড দিয়ে যাওয়া অটোটিকে আটকান। চালক-সহ অটোয় চার জন ছিল। কী উদ্দেশ্যে, কোথা থেকে আসছেন, এ সব জানতে চাইলে অটোর তিন যাত্রী সদুত্তর দিতে পারেনি বলে পুলিশের দাবি। সে সময়ে তাদের জিপে তোলার চেষ্টা করেন সন্দীপবাবুরা। অভিযোগ, সেই সময়েই ওই তিন জনের কেউ সন্দীপবাবুর চোখে ঝাঁঝাল কিছু ‘স্প্রে’ করে। তিনি চোখ চেপে বসে পড়লে অন্য অরিজিৎবাবু ও দুর্গাবাবু তিন জনকে ধরার চেষ্টা করতেই এক জন রিভলভার বার করে দু’রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একটি গুলি সন্দীপবাবুর পিঠের ডান দিকে উপরের অংশে লাগে। কোনও রকমে রিভলভারটি ছিনিয়ে নেন দুর্গাবাবু। তবে ওই দুষ্কৃতীটিকে ধরতে পারেননি তিনি। অরিজিৎবাবু এক দুষ্কৃতীকে ধরার চেষ্টা করলে বেকায়দায় মাথায় চোট পান।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত দু’শো মিটার দূরে থানা থেকে পুলিশ আসে। কিন্তু ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। দেখা মেলেনি অটোটিরও। পুরো ঘটনাটি ঘটে মিনিট ২৫-এর মধ্যে। সন্দীপবাবুকে দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, প্রায় তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে গুলি বার করা গিয়েছে। তাঁর অন্য কোনও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টা তাঁকে আইসিইউ-তে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হবে। অরিজিৎবাবু আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথায় কয়েকটি সেলাই পড়েছে।
ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড এবং ভিন্জেলার সঙ্গে সীমানা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। শুরু হয় নাকা-তল্লাশি। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কারও খোঁজ মেলেনি। তদন্তের স্বার্থে ঘটনার খুঁটিনাটি বিষয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট কিছু জানাতে চায়নি। তবে পুলিশের একটি সূত্রের মতে, ঘটনায় জামশেদপুরের এক দুষ্কৃতীর জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই দুষ্কৃতীকে রবিবার রাতে আসানসোল স্টেশন চত্বরেও দেখা গিয়েছে বলে খবর।
তবে এই ঘটনায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। যেখানে এই ঘটনা, তার অদূরেই রয়েছে আসানসোল স্টেশন, ডিআরএম (আসানসোল ডিভিশন) অফিস, আসানসোল পুরসভা, থানা, বাজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ নানা এলাকা। তা ছাড়া, যে সময়ে এই ঘটনা, তখন আসানসোল স্টেশনে পরপর দূরপাল্লার ট্রেন ঢোকে। ঘণ্টাখানেক বাদেই ছাড়ে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস। ফলে, ওই রাস্তায় যাত্রীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। পুলিশ অবশ্য জানায়, ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের ও অটোটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। উত্তর মেলেনি হোয়াটস অ্যাপ, এসএমএস-এরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy