ফাইল চিত্র
অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল এলাকার মধ্যে নয়, এমন রেলগেটগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন। সম্প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জেলা প্রশাসনকে এ নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলে রেলের হাওড়া ডিভিশন। জেলা প্রশাসন সেটি পাঠানোর পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। কোথাও রেলগেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও ‘আন্ডারপাস’ তৈরি করা হচ্ছে।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “আপাতত চাপ কম রয়েছে, এমন রেলগেট বন্ধ করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সব রেলগেট বন্ধ করা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান-কাটোয়া লাইনকে ‘বিকল্প রুট’ হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে, ওই লাইনের উপরে থাকা সমস্ত রেলগেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেলের এক আধিকারিকেরও দাবি, “বর্ধমান কাটোয়া ‘সিঙ্গল’ লাইন হলেও কর্তৃপক্ষ বিকল্প পথ হিসেবে ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, ওই লাইনকে কাজে লাগাতে পারলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের বিকল্প পথ তৈরি হবে। দ্রুত গতির ট্রেন চালানোর জন্য রেলগেট বন্ধ করে আন্ডারপাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
ওই রেলপথের বলগোনা থেকে বর্ধমান পর্যন্ত ১৫টি রেলগেট রয়েছে। তার মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ এমন ছ’টি রেলগেট বন্ধ করে ‘আন্ডারপাস’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের উপরে মেমারির সরডাঙা রেলগেটটি বন্ধ করার জন্য কয়েকদিন আগে গিয়েছিলেন রেলের লোকজন। কিন্তু গ্রামবাসীদের বাধায় ফিরে আসতে হয়। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রেলেগেটের উপর দিতেই প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার রাস্তা মিশেছে জাতীয় সড়কে। গেটটি বন্ধ হয়ে গেলে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি ওই রাস্তায় আসবে না। ফলে, কৃষিজ ফসল বিক্রি হবে না। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে একটি চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে জেলাশাসক থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। বর্ধমানের কাছে কর্জনা রেলগেটটিও বন্ধ না করার দাবি উঠেছে। স্মারকলিপিও দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
রেল সূত্রে জানা যায়, রাজধানী-সহ বেশ কয়েকটি ট্রেনের গতিবেগ বাড়তে চলেছে। হাওড়া-দিল্লির মধ্যে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে নতুন ট্রেন চালানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই কারণে কর্ড লাইনের উপরে রেলগেটগুলির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়। তার পরে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বেশ কয়েকটি রেলগেট বন্ধ করার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, শক্তিগড়, জৌগ্রাম, মশাগ্রাম-সহ বেশ কয়েকটি রেলগেট বন্ধ করার ব্যাপারে আপত্তি জানানো হয়। কয়েকটি রেলগেট বন্ধ করা হলেও বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। আর কয়েকটি ক্ষেত্রে পুরোপুরি বন্ধ করায় সহমত পোষণ করা হয়। বর্ধমান পূর্বের তৃণমূলের সাংসদ তথা রেলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সুনীল মণ্ডলের কথায়, “পাশাপাশি দুটি রেলগেট। একটি দিয়ে মানুষের যাতায়াত নেই বললেই চলে। এ ধরনের গেট বন্ধ করলেও আপত্তি উঠে আসছে। মানুষকে বোঝানোর জন্য রেলকে বলেছি। বৈঠকও করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy