Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Damodar

দামোদরের ভাঙনে আতঙ্কে দুই এলাকা

দ্রুত ভাঙন রোধের পরিকল্পনা না নিলে বর্ধমান পুর-এলাকাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

বাঁ দিকে, চরমানা। ডান দিকে, কনকপুরের এমনই হাল। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিকে, চরমানা। ডান দিকে, কনকপুরের এমনই হাল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০২:২২
Share: Save:

শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে দামোদরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বেশ কয়েকবছর ধরে ওই এলাকায় ভাঙন চলছে। কিন্তু বর্ষার জল বাড়তে থাকায় এই সপ্তাহেই প্রায় পাঁচশো মিটার জমি ধসে গিয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, দ্রুত ভাঙন রোধের পরিকল্পনা না নিলে বর্ধমান পুর-এলাকাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। অন্য দিকে, জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের কনকপুরেও দামোদরের ভাঙন শুরু হয়েছে। জামালপুর ব্লকের প্রশাসনিক কর্তারা সরেজমিন পরিদর্শনের পরে, একটি রিপোর্ট তৈরি করে সেচ দফতরকে জানিয়েছেন।

বিডিও (জামালপুর) শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “ভাঙনের খবর পেয়ে একটি দল কনকপুরে গিয়েছিল। তারা জানিয়েছে, দামোদরের পূর্ব দিকে চর পড়েছে। সে কারণে জলের স্রোত নদীর পশ্চিম পাড়ে বইছে। তার ফলে, কনকপুরে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’’

ওই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চাষবাসের উপরে নির্ভরশীল। এ বছর জমির ভাঙন দেখে তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। চাষিদের দাবি, গত ১০ দিনে কনকপুরে ৪০০ মিটারের মতো পাড়ের মাটি দামোদরে বয়ে গিয়েছে। জল নামতে শুরু করলে ভাঙন আরও বাড়বে বলে তাঁরা মনে করছেন। কিশোর ঘোষ, ধর্মদাস দাসেদের দাবি, “উল্টো দিকে চর পড়ছে। সে কারণেই দামোদরের স্রোত কনকপুরে দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিন চাষের জমির ক্ষতি হচ্ছে।’’ বুধবার সেচ দফতরের আধিকারিকেরা এলাকায় গিয়ে ভাঙন রোধের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন। মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) সুদীপ ঘোষ বলেন, “সেচ দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাঁরা ভাঙন-পরিস্থিতি দেখে এসেছেন। জল কমলে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন।’’

কনকপুরের বাসিন্দারা আশ্বাস পেলেও বর্ধমান শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে চরমানা-ফরেস্ট বাগান এলাকার চাষিরা তা পাননি! বর্ধমান শহর লাগোয়া হলেও এলাকাটি খণ্ডঘোষের শশঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ছে। ওই এলাকায় দামোদরের উপরে গলসির খানা স্টেশনের সঙ্গে বাঁকুড়া সংযোগে রেল লাইন পাতার জন্য বড় বড় স্তম্ভ বসেছে। স্থানীয় চাষিদের দাবি, স্তম্ভের নীচের এলাকা জুড়ে দামোদরের পূর্ব পাড়ে লম্বালম্বি ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই ধস নামছে। স্থানীয় চাষি রামেশ্বর মাহাত, প্রশান্ত মণ্ডল, ব্রজনাথ মাহাত, গঙ্গা রাজভরদের দাবি, “কয়েকবছর আগে পশ্চিম পাড়ে বোল্ডার ফেলে পাড় বাঁধানোর কাজ করেছিল সেচ দফতর। তার পর থেকে দামোদর পূর্ব পাড়ে বইছে। গত তিন মাসে প্রায় তিনশো বিঘা জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে।’’ ওই এলাকা চন্দ্রমুখী আলু উৎপাদন করার জন্য বিখ্যাত। এ ছাড়া, বছরভর নানা রকম আনাজ উৎপাদন হয়।

বর্ধমান শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভাঙনের এলাকার দূরত্ব পাকা তিন কিলোমিটার। ওই এলাকার যুবক রঙ্গজীব রায় মনে করেন, “ভাঙন আটকাতে না পারলে শহরের উপর প্রভাব পড়তে শুরু করবে।’’

সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (ইদিলপুর) চিররঞ্জন দত্তের কথায়, “আমি ওই এলাকা ঘুরে দেখে এসেছি। জায়গাটি কুমারপুর মৌজার মধ্যে পড়ছে। ব্যাপক ভাঙন রয়েছে। প্রচুর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাটি বাঁধানোর জন্য দফতরে তিন কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, অতিমারির জন্য এ বছর প্রকল্পটি আটকে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Damodar Burdwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy