পুজোর মরসুমকে টপকে গেল বড়দিনের মাস।
জেলা আবগারি দফতরের রাজস্ব আদায়ের হিসাব সে কথাই বলছে। কারণ, অক্টোবরের তুলনায় ডিসেম্বরে ১৭ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব মিলেছে। ডিসেম্বরে পূর্ব বর্ধমানে ১১৭ কোটি ৭২ লক্ষ টাকারও বেশি রাজস্ব পেয়েছে সরকার। এর আগে জেলা থেকে এক মাসে এত টাকা রাজস্ব সরকারের ঘরে পৌঁছয়নি। আবগারি দফতরের কর্তারা মনে করছেন, বড়দিন-বর্ষবরণের রাত তো আছেই, সেই সঙ্গে চোলাই বন্ধে কড়া ব্যবস্থার জেরে দোকান থেকে বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে।
আবগারি দফতরের দাবি, পুলিশের ধরপাকড়ে চোলাই-ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। জেলার বড়-বড় চোলাই-ঘাঁটিগুলি বন্ধ করা হয়েছে। তার ফলে দিশি মদের (কান্ট্রি স্পিরিট) দোকানে ভিড় জমেছে। অক্টোবরে কান্ট্রি স্পিরিট দোকান থেকে বিক্রি বেড়েছিল ৬ শতাংশ। নভেম্বরে শান্তিপুরে বিষমদ-কান্ডের পরে আবগারি দফতর ও পুলিশ চোলাইয়ের ভাটিতে অভিযান শুরু করে। ভাটি ভাঙা ও চোলাই বাজেয়াপ্ত হয়। আবগারি কর্তাদের ধারণা, তার জেরেই ডিসেম্বরে দিশি মদের দোকান থেকে বিক্রি বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ শতাংশ। একই ভাবে, অক্টোবরে বিলিতি মদ (ফরেন লিকার) বিক্রি বেড়েছিল ২৯ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষে তা বেড়ে হয় ৩৬ শতাংশে।
আবগারি দফতরের পূর্ব বর্ধমান জেলা সুপারিন্টেন্ডেন্ট তপনকুমার মাইতি বলেন, ‘‘হিসেবই বলে দিচ্ছে, চোলাইয়ের দাপট অনেকটাই কমে গিয়েছে।’’ ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে দিশি মদ থেকে রাজস্ব মিলেছিল প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ কোটি ২১ লক্ষ টাকার। এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি রাজস্ব পেয়েছে সরকার। বিলিতি মদের ক্ষেত্রে ২০১৭-র ডিসেম্বরে রাজস্ব মেলে ৪৭ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। গত ডিসেম্বরে তা হয়েছে ৭৪ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। শতাংশের হিসেবে যা ৫৭.৩৬ বেশি। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৮৭৬ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। আগের বছরের তুলনায় ৩৫৪ কোটি টাকা বা ৬৭.৮৫ শতাংশ বেশি।
শুধুই কি চোলাই ধরপাকড়ের জেরেই দোকান থেকে মদ বিক্রি বেড়েছে? আবগারি দফতর সূত্রের খবর, বরাবরই দিশি মদের তুলনায় বিলিতি মদের দোকানে বিক্রির অঙ্ক বেশি থাকে। শান্তিপুর কান্ডের পরে দিশি মদের দোকানে বিক্রি খানিক বাড়লেও তাকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। আবগারি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুজোর মাসকে টপকে গেল বড়দিন-বর্ষবরণ। জানুয়ারি মাসে অঙ্কটা বাড়ে কি না দেখার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy