সৈকত মাঝি। —ফাইল চিত্র।
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর ‘প্রেমিকা’-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে। ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ মৃতের দাদার। শুক্রবার এই অভিযোগে বর্ধমান সিজেএম আদালতের দ্বারস্থ হন ছাত্রের দাদা। মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরুর জন্য জামালপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।
পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার কাঁশড়া গ্রামের বাসিন্দা সৈকত মাঝি (১৯) গত ১৫ অক্টোবর আত্মঘাতী হন বলে পরিবারের দাবি। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। শুক্রবার আদালতে সৈকতের দাদা সৌমেন মাঝির দাবি, কাঁশড়া এলাকার এক যুবতীর সঙ্গে সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে সে সম্পর্ক মেনে নেয়নি যুবতীর পরিবার। সৌমেনের আরও দাবি, ‘‘আত্মঘাতী হওয়ার মাস দুয়েক আগে যুবতীর পরিবারের থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল সৈকতকে। সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য যুবতীর পরিবারের হুমকির জেরে আমার ভাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করত না। উদাস হয়ে থাকত। সব ভুলে গিয়ে ওরে পড়াশুনায় মন দিতে বলেছিলাম।’’ তা সত্ত্বেও সৈকত মানসিক ভাবে স্বস্তিতে ছিলেন না বলে দাবি সৌমেনের। তাঁর কথায়, ‘‘সৈকত বলেছিল যে তাঁর প্রেমিকা অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে। তাঁকে ভুলে যাওয়ার জন্য কটূক্তিও করেছে সে। গত সেপ্টেম্বরে ভাইকে দেখা করার জন্য ওই যুবতী ডেকে পাঠিয়েছিল। ভাই দেখা করতে গেলে ওই যুবতী তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে মিলে ভাইকে অপমান করে। তাতে মানসিক ভাবে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আমার ভাই।’’
সৌমেনের অভিযোগ, ‘‘ঘটনার আগের রাতে দেড়টা নাগাদ মত্ত অবস্থায় কয়েক জন আমাদের বাড়ির দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে ভাইকে ডাকাডাকি করছিল। ভাই বাইরে বেরিয়ে এলে কটূক্তি করতে থাকে তারা। এমনকি, গুলি করে মেরে দেওয়ারও হুমকি দেয়। ওরা চলে যাওয়ার পর ভাই নিজের ঘরে ঘুমোতে যায়। তবে পরের দিন সকালে সিলিং ফ্যানের হুকে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ভাইয়ের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’’ সৌমেনের আইনজীবী শর্মিষ্ঠা সামন্তের দাবি, “ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ার আত্মঘাতী হওয়ার কথা থানায় জানানো হয়েছিল। তবে থানা থেকে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে ওই ছাত্রের পরিবারকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারকেও জানানো হয়েছিল। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে সিজেএম আদালতে মামলা করা হয়েছে। সিজেএম তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’’
পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে জামালপুর থানার এক আধিকারিকের পাল্টা দাবি, “সম্ভবত কেউ থানায় অভিযোগ জানাতে আসেননি। তবে আদালত নির্দেশ দিলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy