Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
elephant

Elephant: দলের ছোটরা পিছিয়ে পড়ছে, থমকে হাতিরা

পরিস্থিতি বুঝে যে রাস্তা দিয়ে হাতির দল যাবে, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ও চাষিদের সাহায্য চেয়ে বন দফতর, প্রশাসন একটি বৈঠকও করে।

হাতির দলের সঙ্গে চলেছে একটি শাবকও, আউশগ্রামে।

হাতির দলের সঙ্গে চলেছে একটি শাবকও, আউশগ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫৯
Share: Save:

চলতে চলতে গলসির পারাজ স্টেশনের কাছে রেললাইনের উপরে উঠে গিয়েছিল বেশ কয়েকটা হাতি। হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে দেখে, অনেক দূরে পড়ে রয়েছে শাবকদের নিয়ে হাতিদের আরও একটি দল। রেললাইন না পেরিয়ে ফের উল্টো পথে হাঁটা লাগায় ওই দলটিও। রবিবার রাতেও হুলাকর্মীরা বাঁকুড়ার দিকে পাঠাতে পারেননি হাতির দলটিকে। আউশগ্রামের ভাল্কির জঙ্গলেই রয়েছে তারা। বন দফতরের আধিকারিকদের দাবি, রাতভর বৃষ্টির মধ্যেও স্থানীয় কিছু চাষি মাঝেমধ্যেই শব্দবাজি ফাটাচ্ছেন। তাতেই চমকে উঠছে হস্তিশাবকেরা। গতি কমিয়ে, দাঁড়িয়ে পড়ছে তারা। জমিতে বসে যাচ্ছে। হাঁটতেও চাইছে না গন্তব্যস্থলের দিকে।

পরিস্থিতি বুঝে যে রাস্তা দিয়ে হাতির দল যাবে, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ও চাষিদের সাহায্য চেয়ে বন দফতর, প্রশাসন একটি বৈঠকও করে। সেখানে ঠিক হয়, হুলাকর্মীদের সাহায্যে স্থানীয় যুবকেরাই হাতিদের রাস্তা দেখিয়ে নিয়ে যাবে। হাতিরা যাতে বিরক্ত না হয়, খেয়াল রাখা হবে সেই দিকেও। পুরো রাস্তা পুলিশের পাহারও থাকবে।

ডিএফও (পূর্ব বর্ধমান) নিশা গোস্বামী বলেন, “সবার সঙ্গে সমন্বয় করে হাতিগুলিকে গন্তব্যস্থলে পাঠানোর উদ্দেশেই বৈঠক করা হয়েছে। হাতিগুলি ভাল্কির জঙ্গলে তিনটে দলে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। তাদের এক করে ফের বাঁকুড়ার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’

সোমবার বিকেলের পর থেকে ফের অভিযান শুরু করেছেন হুলাকর্মীরা। তাঁরা জানান, বিভ্রান্ত করার জন্য বারবার দলে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। সকালের দিকে দু’টি দল, দুপুরের পরে তিনটে দলে ভাগ হয়ে লুকিয়ে পড়ছে। রবিবার দুপুরে ভাল্কি জঙ্গলের ভিতর ডোমচাঁদি, বহমানপুর ও প্রতাপপুরে তিনটে দলে ভাগ হয়ে হাতিদের ঘুরতে দেখা যায়। এ দিনও ‘ড্রোন’ উড়িয়ে হাতিদের দেখেছেন বন দফতরের শীর্ষ আধিকেরা।

দলমার হাতির দলের মেজাজের সঙ্গে ‘পরিচিত’ হুলাকর্মী, রেঞ্জ অফিসারদের দাবি, হাতির মর্জি সহজে বোঝা সম্ভব নয়। বারবার সেটাই হচ্ছে। বড় হাতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শাবকেরা হাঁটতে পারছে না। বৃষ্টিতেও তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। এক রেঞ্জ অফিসারের কথায়, “এক মাসের থেকেও কম বয়সের একটি শাবক রয়েছে ওই দলে। তাকে নিয়েই হাতিদের চিন্তা। ওই শাবক বৃষ্টির মধ্যে ক্লান্ত হয়ে খেত জমিতে বসে পড়ছে। মা-হাতি শুঁড় দিয়ে ঠেলে এগিয়ে দিতে চাইলেও শাবকটি পারছে না।’’

হুলা পার্টির সদস্যদের দাবি, খেত জমির পাশে গ্রামগুলিতে স্থানীয় লোকজন দাঁড়িয়ে থাকছেন। অনেকে শব্দবাজি ফাটাচ্ছেন, চিৎকার করছেন। তাতেই ঘাবড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে হাতিরা। এগিয়ে থাকা দলের সঙ্গে পিছনের দলের তিন-চার কিলোমিটারের দূরত্ব হয়ে যাচ্ছে। রেল লাইনের উপরে উঠে পিছনের দলটিকে দেখতে না পেলেই ফের মুখ ঘুরিয়ে তাদের কাছে চলে যাচ্ছে হাতিরা। মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পূর্ব চক্র) কল্যাণ দাস জানান, হাতি শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রাণী। সে কারণেই গন্তব্যে যাওয়ার সময় সবাই এক সঙ্গে রয়েছে কি না, দেখে নেয়। না পেলেই, মুখ ঘুরিয়ে নেয়।

বিডিও (আউশগ্রাম ২) গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাতিগুলি যাতে নির্বিঘ্নে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়, সে জন্য বৈঠক করে সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’’ বিধায়ক (আউশগ্রাম) অভেদানন্দ থান্দারও বলেন, “হুলা পার্টির কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজন থাকবেন। তাতে রাস্তা চিনতে সুবিধা হবে। কেউ যেন হাতিদের ন্যূনতম উৎপাত না করেন, সে কথা বলা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

elephant Galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy