শনিবার শুনশান বর্ধমানের নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড। ছবি: উদিত সিংহ।
পাঁচ দিন আগে থেকে বাস নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত। কিন্তু এ বার খণ্ডঘোষ, রায়না ও জামালপুর ছাড়া তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের ধর্মতলার সমাবেশে যাওয়ার জন্য পূর্ব বর্ধমানে বেসরকারি বাস ‘আটকে’ রাখার তেমন অভিযোগ নেই। দক্ষিণ দামোদরের ওই সব এলাকার নানা বাস শনিবার সকাল থেকে চালকল, হিমঘরে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা তৃণমূলের দাবি, কর্মীদের ট্রেনে যেতে বলা হয়েছে। যেখানে ট্রেন নেই, সেখান থেকে সরকারি বাস ভাড়া করে শনিবার রাতেই ধর্মতলা রওনা হবেন কর্মীরা। তৃণমূলের দাবি, জেলা থেকে লক্ষাধিক লোক ধর্মতলায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ট্রেনেই কর্মীদের যেতে বলা হয়েছে। স্টেশন থেকে দূরের বাসিন্দারা ট্রেন ধরার জন্য বাসে করে আসবেন। যেখানে একদম উপায় নেই, তাঁরা বাসে যাবেন। যাত্রাপথে কোনও অসুবিধা যাতে না হয়, তা খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে বুথ ও অঞ্চল সভাপতিদের” তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া, কেতুগ্রাম ২, পূর্বস্থলী, কালনা, মেমারি, বর্ধমান শহর ও লাগোয়া দু’টি ব্লক, জামালপুরের একাংশ, গলসি, খণ্ডঘোষ ও রায়নার একাংশের কর্মীদের ট্রেনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২১ জুলাই সমন্বয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলাম বলেন, “মন্তেশ্বর, রায়না, জামালপুর, খণ্ডঘোষ, মঙ্গলকোট, ভাতার-সহ কয়েকটি ব্লক থেকে সাড়ে ছ’শোর মতো বাস যাবে। বেশির ভাগই সরকারি বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে।”
আজ, রবিবার রাস্তায় যে বাস মিলবে না, তার আঁচ শনিবারই মিলেছে। এ দিন সকাল থেকে বর্ধমানের নবাবহাট ও উল্লাস বাসস্ট্যান্ডে তুলনায় বাস অনেক কম ছিল। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, দক্ষিণ দামোদর রুটে শুক্রবার বিকেল থেকেই বাস কম। বর্ধমান-বাঁকুড়া, বর্ধমান-আরামবাগ রুটে প্রচুর বাস শনিবার সকাল থেকে চলেনি। খণ্ডঘোষ, রসুলপুর, বোঁয়াই, রায়না-সহ একাধিক জায়গায় অনেক বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি, বর্ধমানের বাস বাঁকুড়া, হুগলিতে আটকানো হয়। তাই এ বার তাঁরা আগে থেকে বাসগুলি ধরে রেখেছেন। গলসির সিকন্দর শেখ, বোলপুরের সৌম্য কার্ফারা বলেন, “বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ অপেক্ষা করে বাস পেয়েছি।”
দক্ষিণ দামোদর বাস ব্যবসায়ী ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা সুকুর মোল্লার দাবি, “২১ জুলাই আসার অন্তত পাঁচ দিন আগে থেকে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। এ বার শনিবার সকাল থেকে দক্ষিণ দামোদর ছাড়াও হুগলি, বাঁকুড়ায় বাস আটকানো শুরু হয়েছে।” জেলা বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তুষার ঘোষের দাবি, “দক্ষিণ দামোদর ছাড়া জেলার অন্য জায়গায় বাস নিয়ে টানাটানির খবর নেই। তবে দক্ষিণ দামোদরের ২৫২টির মধ্যে প্রায় ৯০% বাস রবিবার রাস্তায় নামবে না।” মেমারি-মালডাঙা-কাটোয়া রুটের কোনও বাস নামবে না বলে জানা গিয়েছে। মেমারির এক নেতা বলেন, “মেমারি দিয়ে চলা প্রায় ১২৫টি বাসই রবিবার সভায় যাবে।”
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, রাস্তার ধারে রান্না করে খাওয়া দল সমর্থন করে না। জেলা সভাপতির নির্দেশ, বুথ-অঞ্চলের সঙ্গে বিধায়ক-জেলা নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয় রাখতে হবে। মন্তেশ্বরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান, তাঁর আবাসনে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সন্দীপ নন্দীর দাবি, ‘‘মানুষ যেতে চাইছেন না। গায়ের জোরে বাস তুলে সাধারণ মানুষকে হয়রান করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy