মায়াবাজার রেলগেট। —নিজস্ব চিত্র।
জমি অধিগ্রহণের খরচ থেকে শুরু করে নির্মাণ খরচ, সবই নিজেরা দিয়ে রাজ্যের কয়েকটি রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। সেই তালিকায় রয়েছে দুর্গাপুরের মায়াবাজার। কিন্তু কাজের কোনও অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও রেলের তরফে ইতিবাচক আশ্বাস মিলেছে।
দুর্গাপুর শহরের ভিতর দিয়ে গিয়েছে হাওড়া-দিল্লি প্রধান রেললাইন। রাজধানী, শতাব্দী থেকে শুরু করে মেল, এক্সপ্রেস, সুপার ফাস্ট, লোকাল, মালগাড়ির যাতায়াত লেগেই থাকে। ফলে, প্রায় সারা দিন ধরেই মাঝে মাঝে বন্ধ থাকে মায়াবাজারের এই রেলগেটটি। এই রেলগেট ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে লাইনের দক্ষিণে ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে ওঠে। বাম আমলে নতুন শিল্পনীতির হাত ধরে লাইনের দক্ষিণ দিকে কয়েকটি বেসরকারি ইস্পাত ও ইস্পাত অনুসারী শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে। রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুর, মায়াবাজার, ডিটিপিএস কলোনি, পুরষা প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দাদের সিটি সেন্টার, বেনাচিতি, ডিএসপি টাউনশিপ যেতে গেলে এই রেলগেট হয়ে যাতায়াত করতে হয়। রেললাইন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০টি ট্রেন ও মালগাড়ি যাতায়াত করে। এর জেরে দিনের অধিকাংশ সময়ে রেলগেট বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয় বাসিন্দাদের।
নিত্যযাত্রীরা জানান, রেললাইন পারাপার শেষ হওয়ার আগেই মাঝ পথেই আবার রেলগেট বন্ধ হয়ে যায়। মাঝ পথে রেললাইনে যানবাহন আটকে থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে সকাল ৭ থেকে ৯টা এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। বাসিন্দারা জানান, দিন কয়েক আগে হাওড়া-রক্সৌল ট্রেন আসছে বলে রেলগেট বন্ধের জন্য সাইরেন বাজতে থাকে। কিন্তু যানবাহন লাইন পারাপার করতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত রেলগেট বন্ধই করা যায়নি। সিগন্যাল লাল দেখে ট্রেন রেলগেট থেকে ২০০মিটার দূরে দাঁড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
তাই দুর্ঘটনা রুখতে ও ভোগান্তি এড়াতে উড়ালপুলের দাবি দীর্ঘ দিনের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে রেলের তরফে জানানো হয়, উড়ালপুল নির্মাণের জন্য সমীক্ষার কাজ চলছে। রেলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে বেশ কয়েক বার চিঠিপত্র আদান-প্রদানও হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় জমি না মেলায় কাজ শুরু হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পে সারা দেশে ১,৫০০টি উড়ালপুল ও ৫৫৪টি স্টেশন আধুনিকীকরণের সূচনা করেন। সে দিন পানাগড় স্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তৎকালীন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া জানিয়েছিলেন, ‘ডিএফসিসিআইএল’ মায়াবাজার রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণ করবে। রেলবোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা খরচ হবে সবই রেল বহন করবে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ৮ মাস। কাজ এগোয়নি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “যে সব রেলগেটে উড়ালপুল হবে, সেই তালিকায় মায়াবাজার রয়েছে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক আধিকারিক বলেন, “রেল খরচ দেবে। তবে জমি জোগাড় করা-সহ কিছু বিষয়ে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy