দুর্গাপুর পুরসভা। ফাইল চিত্র
লকডাউনের প্রথম তিন মাস কর আদায় একেবারেই বন্ধ ছিল। আনলক-পর্বে তা ধীরে ধীরে শুরু হলেও করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বন্ধ হয়ে যায় দুর্গাপুর পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে কর আদায় তলানিতে ঠেকেছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা যায়। ফলে, কী ভাবে পুরসভার নিজস্ব উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পরিচালনা করা যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি রয়েছে বলে মনে করছেন পুরকর্মীদেরই একাংশ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি, জলের কর, টোল ট্যাক্স, বিল্ডিং প্ল্যান মঞ্জুর প্রভৃতি খাতে প্রতি মাসে সাধারণ ভাবে পুরসভার আয় হয় গড়ে প্রায় এক কোটি টাকা। মার্চ থেকে মে, তিন মাস সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল। এই সময়ে কোনও কর আদায় হয়নি। আনলক-পর্বে কর আদায় শুরু হয়।
কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝি ফের পরিস্থিতি বদলায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই সময়ে দুর্গাপুর শহরে করোনার সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রথমে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পুরসভায় সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ৩১ অগস্ট পর্যন্ত। ১৭ অগস্ট এক কর্মীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় পরপর দু’দিন পুরসভা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। সব মিলিয়ে কর আদায় এই মুহূর্তে প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে পুরসভায়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসে গড়ে ২০ লক্ষ টাকা হারে কর আদায় হয়েছে জুন, জুলাইয়ে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন পুর-কমিশনার পুষ্পেন্দু মিত্রও। তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েকমাস কর আদায় সে ভাবে হয়নি। জুনে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকার পরে, ফের কর আদায় প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।’’
এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পরিচালিত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বড় বড় উন্নয়নের কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। কিন্তু নিকাশি, জঞ্জাল সাফাই এবং নানা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করতে হয়। যেমন, জরুরি ভিত্তিতে বীরভানপুর শ্মশানের আমূল সংস্কার কাজের জন্য ৩৭ লক্ষ টাকা প্রাথমিক ভাবে পুরসভাই দেবে বলে ঠিক হয়েছে। পরে, সেই অর্থ চেয়ে আর্জি জানানো হবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। কিন্তু কর আদায় না হলে কী ভাবে এ ধরনের কাজকর্ম পুরসভা হাতে নেবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন পুরসভার কর্মীদের একাংশই।
আশঙ্কায় রয়েছেন পুরসভার কর্মীদের একাংশও। পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডে প্রায় ১,২০০ সাফাইকর্মী রয়েছেন। আইএনটিইউসি অনুমোদিত ‘ডিএমসি ক্যাজুয়াল সাফাই কর্মী ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক সুভাষচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘পুরসভার রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা হচ্ছে। আগে সাফাইকর্মীরা বেতন পেতেন মাসের ১০ তারিখের মধ্যে। লকডাউনের সময় থেকে প্রায় ২৫ তারিখ হয়ে যাচ্ছে।’’
পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি যদিও বলেন, ‘‘এখন কর আদায় তলানিতে ঠেকেছে, পুরসভার নিজস্ব তহবিলে সাময়িক প্রভাব পড়েছে, এ সবই ঠিক। তবে এই বকেয়া কর পুরসভা পাবেই। আর উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাবে না। কারণ, এ সব কাজকর্মের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার টাকা দেয়। পুরসভা খুব কম টাকা বরাদ্দ করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy