প্রতীকী ছবি।
একই গ্রামে তিনটি বারোয়ারি পুজো। পরস্পরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও রয়েছে। কার মণ্ডপে পুজোর দিনগুলিতে বেশি দর্শক হল, নজর থাকে সে দিকে। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা। পুজো কী ভাবে হবে, সে চিন্তা সব পুজো কর্তাদেরই। এরই মধ্যে এ বার তিনটির মধ্যে একটি পুজো উদ্যোক্তা রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে অন্যদের টেক্কা দেওয়ার রাস্তায় না হেঁটে সেই টাকা বাকি পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাতারের সাহেবগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পুজো কমিটি। গ্রামের একটি পরিবারকেও পুজোর খরচ বাবদ টাকা দেওয়ার কথা ভেবেছে তারা।
ভাতারের সাহেবগঞ্জ পুজো কমিটির কর্তা রাজীব মান্না বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান বাবদ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। গ্রামে আরও দু’টি পুজো হয়। করোনা-আবহে কেউ চাঁদা বা বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা তুলে পুজো করতে পারবে না। তাই অনুদানের টাকা থেকে ওই দু’টি কমিটিকেও সাহায্য করা হবে বলে ঠিক করেছি আমরা।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের অন্য দু’টি বারোয়ারি পুজো সরকারি অনুদানের জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এ ছাড়া, গ্রামের হালদার পরিবারে বহু বছরের পুরনো দুর্গাপুজো হয়। প্রতি বছর কার্যত গ্রামবাসীর সাহায্যেই প্রতিমা আসে। এ বার ওই পরিবারকেও অনুদান পাওয়া সাহায্য করা হবে বলে জানান রাজীববাবুরা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা, তৃণমূলের সাহেবগঞ্জ ১ অঞ্চল সভাপতি জয় ঘোষ বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের পুজো কমিটির বাজেট প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। তারা করোনা-যোদ্ধাদের সম্মানিত করবে বলেও ঠিক করেছে। নিজেদের পুজোর জন্য টাকা ওরা ঠিক জোগাড় করে ফেলতে পারবে। কিন্তু বাকি দু’টি বারোয়ারি পুজো হয়তো তা পারবে না। হালদারদের বাড়ির পুজোরও এক রকম পরিস্থিতি। গ্রামের মানুষ এ বার ততটা সাহায্য করতে পারবেন না। পুজো সবার, এই ভাবনা থেকেই বাসস্ট্যান্ড কমিটি এগিয়ে এসেছে।’’
হালদার পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাদের পুজো শুরু হয় ১২১৩ বঙ্গাব্দে। অনটনে পুজো এক সময়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে গ্রামের মানুষ ও আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় ৬০ বছর ধরে নতুন করে পুজো হচ্ছে। ওই পরিবারের কর্তা আদিত্যবাবু বলেন, ‘‘প্রতি বছরই গ্রামের মানুষের সাহায্য চাই। সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী, এগিয়ে আসেন। মন্দির সংস্কারেও সবার সাহায্য পেয়েছি। করোনার জন্য সবাই সমস্যায় আছেন। সেখানে একটি ক্লাব সরকারি অনুদানের একাংশ আমাদের দিয়ে বড় মনের পরিচয় দিল। আমাদের অনেক উপকার হবে।’’
একই সুর ওই গ্রামের হাটতলা পুজো কমিটির পলাশ নায়েকের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর তো চাঁদা তোলা যাচ্ছে না। সেখানে সরকারের অনুদানের একাংশ পেলেও সুবিধা হবে।’’ গ্রামের সানাপাড়া পুজো এ বার ৬৮ বছরে পা দিল। তাঁরাও আর্থিক অনটনে ভুগছে বলে জানান পুজোর কর্তারা। কমিটির তরফে অনুপ ঘোষের দাবি, ‘‘দুর্গাপুজোয় অন্তত এক লাখ টাকা খরচ। বাসস্ট্যান্ডের পুজো কমিটি সরকারি অনুদানের একটা অংশ দিয়ে আমাদের সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে। তাতে আমাদের সুবিধে হবে।’’
ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল বলেন, “সাহেবগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কমিটি এই সময়ে গ্রামের বাকি পুজোগুলির দিকে যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল, তা উদাহরণ হয়ে থাকবে। এখন যে সবার পাশে দাঁড়ানোর সময়, তা মনে করিয়ে দিলেন ওই পুজোর উদ্যোক্তারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy