প্রতীকী ছবি।
‘চড়াম-চড়াম’ থেকে ‘গুড়-বাতাসা’য় বরাবর সরব এক জন। অন্য জন আবার চুপচাপ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকার দায়িত্ব হাতবদলে, কোন পথে দল চলবে তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটে। যদিও ওই দুই বিধানসভা এলাকার নেতাদের দাবি, দু’দিকের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই দল পরিচালনা করা হবে।
গরু পাচার মামলায় আসানসোল সংশোধনাগারে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবারই পূর্ব বর্ধমানে তাঁর অধীনে থাকা তিন বিধানসভা এলাকা (কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম) দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, অনুব্রত এতদিন দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে বিরোধীদের কাউকে রেয়াত না করে দল চালিয়ে এসেছেন। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথবাবু যথেষ্ট মিতভাষী। ফলে ভোটের আগে কোন কৌশলে দল এগোবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ও কাল রবিবার কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটে দলীয় কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি থাকবেন কি না, তা নিয়েও কৌতুহল বাড়ছে কর্মীদের মধ্যে।
বাম জমানা থেকেই কাটোয়া মহকুমার দুই বিধানসভা কেন্দ্রে দলের নেতৃত্ব দিতেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ২০০৯ সালের পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তিনি প্রচারের আলোয় আসেন। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, বিরোধীদের হুমকি দেওযা থেকে অপছন্দের দলীয় কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া, কোনও কিছুতেই পিছপা হননি তিনি। এই দুই বিধানসভা কেন্দ্র বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকায় তাঁর ইচ্ছেয় ছিল শেষ কথা। পূর্ব বর্ধমানের জেলা তৃণমূল সভাপতিরাও তাঁর এলাকা নিয়ে মন্তব্য করতেন না। তবে এখন কেষ্ট কারাগারে। ফলে দল চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন কর্মীদের অনেকেই। যদিও অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের দাবি, প্রত্যেকের মতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। পুরো এলাকা হাতের তালুর মতোই চেনেন কেষ্ট।
মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কুরুম্ব গ্রামের বাসিন্দা জামাত আলি শেখ বলেন, ‘‘আমার মতো অনেক পুরনো তৃণমূল কর্মীই অনুব্রত মণ্ডলের ধারেকাছে যেতে পারি না। কারণ, অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীর পাশাপাশি তাঁর মেজাজ সব সময় গরম। কোনও সমস্যার কথা শোনাতে গেলে পাল্টা নানা অপমানসূচক কথা বলে সরিয়ে দিতেন। এই কারণে অনেকেই বসে গিয়েছেন। রবিদা অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের। আমরা তাঁর নেতৃত্বেই ছাত্র রাজনীতি করে উঠে এসেছি। রবিদার নেতৃত্বে দল মঙ্গলকোটে আরও শক্তিশালী হবে বলেই মনে করি।’’
প্রায় একই দাবি করেছেন কেতুগ্রামের বামুণ্ডি গ্রামের তৃণমূল কর্মী সুফি সাউদুল মান্নান ওরফে সাউদ মিঞা। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশু কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ। দলে আমরা কোনও গুরুত্ব পাই না। রবিদা দায়িত্ব পাওয়াই আমরা খুশি।’’ যদিও অনুব্রতর নেতৃত্বে কোনও অসুবিধা ছিল না, সেই দাবিও করেছেন অনেকে।
মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘রবিদার সঙ্গে আমাদেরও খুবই ভাল সম্পর্ক। দুই জেলার সঙ্গেই সমন্বয় রেখে চলা হবে। নেতৃত্ব নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। রবিবার কৈচরে দলীয় কর্মসূচিতে রবিদা থাকবেন।’’ কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের দাবি, ‘‘এতদিন বীরভূম জেলার নেতৃত্বে চলছিলাম। দল যাঁকে দায়িত্ব দেবে তাঁকে নিয়ে চলতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’ কান্দরায় দলীয় কর্মসূচিতে বীরভূামের নেতৃত্ব থাকবেন। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হওয়ায় রবি চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হয়নি বলেও দাবি তাঁর।
জেলা তৃণমূল সভাপতি শুধু বলেন, ‘‘তৃণমূল একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলনেত্রীর নির্দেশে প্রত্যেকে চলেন। আগামী রবিবার মঙ্গলকোটের কৈচরে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy