—ফাইল চিত্র।
স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় অকৃতকার্য পড়ুয়াদের খাতার ‘স্পেশ্যাল রিভিউ’ করবেন সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষকেরাই। সম্প্রতি কলেজে কলেজে পৌঁছনো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নির্দেশিকাকে ঘিরে মতভেদও শুরু হয়েছে কলেজের অধ্যক্ষ ও টিআইসিদের মধ্যে।
অনার্স ও পাস কোর্সের বিষয়ে যথাক্রমে পাশ-নম্বর ৪০ ও ৩০। সেখানে কারও প্রাপ্তি, ১৭-১৮। কারও বা শূন্য। রিভিউতেও বাড়েনি নম্বর! এক বার নয়, বরং দু-তিন বার পরীক্ষা দিয়েও এক-এক বর্ষের গণ্ডী টপকাতে পারেননি অনেকেই। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের এমনই বেশ কয়েক জন পড়ুয়া পাশ করানোর দাবিতে কিছু দিন আগে উপাচার্য, পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর ঘেরাও করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে ঠিক হয়, ওই পড়ুয়াদের খাতার ‘স্পেশ্যাল রিভিউ’ হবে। জানা গিয়েছে, সাধারণ ‘রিভিউ’-এর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিযুক্ত পরীক্ষকেরা খাতা দেখেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের খাতার প্রতিলিপি চলে যাবে সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের কাছে। তার পরে সেই কলেজেরই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক সেই খাতা পরীক্ষা করবেন। আগে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকদের খাতা দেখার পরের নম্বরের যদি বড় ফারাক থাকে, তা হলে সেই খাতা ফের বিশ্ববিদ্যালয়েরই তত্ত্বাবধানে দেখা হবে। সেই ফলই হবে চূড়ান্ত। উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের প্রতি দরদি ও মানবিক হয়ে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসি-র সদস্যেরা।’’
জেলার কলেজগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলির অধ্যক্ষ, টিআইসি, ওআইসিদের কাছে ৯ জুলাই সেই চিঠি পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘অকৃতকার্য পড়ুয়াদের উত্তরপত্রের একটি প্রতিলিপি ১২ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের দিয়ে উত্তরপত্র দেখানোর ব্যবস্থা করুন। ১৩ তারিখের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে রিভিউ করা উত্তরপত্রগুলি সংগ্রহ করা হবে।’
কিন্তু উপাচার্য যাই বলুন এ নিয়ে শিক্ষক মহলে রীতিমতো তর্জা শুরু হয়েছে। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের টিচার্স কাউন্সিল বৈঠক করে জানিয়েছেন, তাঁরা এভাবে খাতা দেখাবেন না, দেখতেই যদি হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নিয়ামকের সামনেই দেখবেন। অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের অভিমত, এতে শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে সবার আগে। তবে ব্যতিক্রমও আছে। খাতা নিয়েছেন হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, ‘‘কিছু লেখেনি অথচ জোর করে বেশি নম্বর বাড়িয়ে দিলেই সেটা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করবে তেমন তো নয়। নিয়ম কানুন রয়েছে। ১০ নম্বরের অতিরিক্ত নম্বর বাড়লে সেটা অর্ধেক যোগ হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য তথা সিউড়ি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে পড়ুয়া কিছু লেখেনি, তার নম্বর বাড়াতে বলা হচ্ছে না। নম্বর বাড়ানোর উপায় থাকলে সেটা শিক্ষকেরা করবেন ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পড়ুয়াদের স্বার্থে এটুকু সহানুভূতি শিক্ষকেরা দেখাতে পারতেন।’’
সহ-প্রতিবেদন: সৌমেন দত্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy