ফাইল চিত্র।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে বিধিনিষেধ চলছে। ছাড় রয়েছে একশো দিনের প্রকল্পে। অথচ, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে কাজের সুযোগ বাড়ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, সমস্ত ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘প্রাক্-বর্ষা মরসুমে কাজ করার নির্দেশ এসেছে। সেইমতো পঞ্চায়েতগুলি কাজ শুরু করেছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায় গাছ লাগানো, সেচ খাল সংস্কার, নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, কৃষিকাজে ১০০ দিন প্রকল্প যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পে গতি আনার জন্য হাঁস-মুরগি, ছাগল চাষেও জোর দেওয়ার কথা ভেবেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবর্ষে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ২১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ২১৩টি পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ চলছে। জেলায় ‘সক্রিয় শ্রমিক’ রয়েছেন প্রায় ১২ লক্ষ। তার সঙ্গে ৬২,০১৫ জন ‘অদক্ষ’ শ্রমিকও ওই প্রকল্পের কাজে যুক্ত হয়েছেন। চলতি অর্থবর্ষে শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে প্রায় ৩৬ লক্ষ। কাজ মিলেছে গড়ে ১৬ দিন। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি প্রকল্পের কাজে আগ্রহ কমছে? বাস্তব পরিস্থিতি অবশ্য বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। রুটিরুজির সন্ধানে কাজ্যের জন্য হন্যে হয়েও ঘুরছেন অনেকে।
খণ্ডঘোষের দইচাঁদা গ্রাম থেকে বর্ধমানের একটি বস্ত্র বিপণিতে কাজ করতে আসতেন সন্তু রায়। বর্তমানে দোকান আংশিক সময়ের জন্য খোলা থাকায় ও গণপরিবহণ ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় অন্য নানা কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। সন্তুবাবুর দাবি, ‘‘কী ভাবে সংসার চলছে, বোঝাতে পারব না। একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পেলে কিছুটা সুরাহা হতো।’’ ভাতারের শেখ কামাল থেকে মন্তেশ্বরের সৈয়দ হাসানেরও একই দাবি। তাঁদের অভিযোগ, বেশির ভাগ মানুষই বসে রয়েছেন। অথচ, কাজ চাইতে পঞ্চায়েত অফিসে গেলে বলা হচ্ছে, এখন করোনা সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ চলছে। বিধি-নিষেধ না ওঠা পর্যন্ত একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া মুশকিল।
গত বছর জেলায় সাত লক্ষেরও বেশি পরিবার ওই প্রকল্পে কাজ পেয়েছিল। ২০ কোটি ৪২ লক্ষের বেশি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনকেই সাধারণ মানুষের কাছে কাজ পৌঁছে দিতে হবে বলে বিরোধীরা দাবি করেছেন। বর্ধমান পূর্বের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডলের দাবি, ‘‘মানুষের হাতে কাজ দেওয়া প্রশাসনের দায়িত্ব। রাজ্য সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। আমরা একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ার দাবি করছি।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষও বলেন, ‘‘বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ হারিয়ে মানুষ বাড়িতে বসে থাকছেন। অথচ, একশো দিনের প্রকল্পের কাজ দিতে পারছে না প্রশাসন।’’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা পরিষদের সভানেত্রী তথা রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়া। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে বৈঠক হচ্ছে না বলে নজরদারির অভাব রয়েছে। খুব দ্রুত ভার্চুয়াল বৈঠক করে একশো দিনের কাজ ঠিক ভাবে রূপায়ণ করতে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy