দুর্গাপুরের কল্পতরুনগর কলোনিতে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের ব্যবহার বাড়ছে। তাই কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা। এমনটাই দাবি করেছেন পশ্চিম বর্ধমানের প্রদীপ তৈরির কারিগর থেকে বিক্রেতারা। গত দু’বছরের করোনা কাঁটা সরিয়ে ব্যবসা যে আরও ভাল হবে, সেই আশায় রয়েছেন কারিগরেরা। তাঁরা জানান, সারা বছর মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করলেও, এই সময় শুধু বিভিন্ন রকমের প্রদীপ তৈরির উপরেই জোর দেওয়া হয়।
দুর্গাপুর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, পানাগড়ের মতো এলাকায় বহু মানুষ মাটির প্রদীপ নিয়ে বিক্রির জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসেন। পাশাপাশি, ওই সব এলাকারও কুমোরেরাও প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। কুমোরপাড়ার শিল্পীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই কালীপুজো বা দীপাবলিতে কৃত্রিম আলোর ব্যবহার অনেকটাই বেড়েছে। মাটির প্রদীপের ব্যবহার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে তাঁদের অভিজ্ঞতা, আস্তে আস্তে মানুষের স্বাদের পরিবর্তন হচ্ছে। এখন দীপাবলিতে অনেকেই মাটির প্রদীপ ব্যবহারের উপরেই জোর দিচ্ছেন। আর তার সুফল পাচ্ছেন কুমোরেরা। দুর্গাপুরের এক কুমোর চন্দ্রশেখর পণ্ডিত জানান, গত বছরে করোনার জন্য তাঁদের বিক্রি ভাল হয়নি। তবে এ বছর এখনও পর্যম্ত বিক্রি ভালই আছে। তিনি বলেন, “সাদামাটা মাটির প্রদীপ নয়, এখন নানা রঙের প্রদীপের চাহিদা অনেকটাই বেশি। প্রদীপ অনুযায়ী দামও মেলে।” ১ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রদীপ রয়েছে তাঁর কাছে। তাঁর সংযোজন: “প্রদীপের বিক্রি ভাল হলে, আমাদেরও কিছুটা লাভ হয়। তাই এ বছর অনেকটাই তৈরি করে রেখেছি।”
কুমোরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এখন বাজারে নানা রঙের প্রদীপের চাহিদা অনেকটাই বেশি। ক্রেতাদের এই ধরনের প্রদীপেই টান বেশি। সে কথা মাথায় রেখে কুমোরেরাও নানা রঙের প্রদীপ তৈরি করছেন। রানিগঞ্জের অশোক পণ্ডিত বলেন, “আমি প্রায় দশ হাজার নানা রঙের প্রদীপ তৈরি করে রেখেছি। এখনও বিক্রি ভাল হচ্ছে।” পানাগড়ের জগদীশ পণ্ডিত জানান, এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার প্রদীপ তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় তাঁদের প্রদীপেরও দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। আবার নানা রঙের প্রদীপ তৈরি করতে খরচও বাড়ে। তিনি জানান, এখন বেশির ভাগ কুমোরই যন্ত্রের সাহায্যে প্রদীপ তৈরি করেন। কিন্তু অনেক কুমোরেরই সেই যন্ত্র কেনার ক্ষমতা থাকে না। তিনি বলেন, “সরকারি তরফে যদি কুমোরদের এ বিষয়ে সাহায্য করা হয়, তা হলে আমাদের মতো কুমোরদের সুবিধা হবে।” এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “সমস্যার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।”
ক্রেতা ধর্মরাজ রাউত, দিগন্ত পালরা বলেন, “মাটির প্রদীপের ঐতিহ্যই আলাদা। সকলেরই উচিত মাটির প্রদীপ ব্যবহার করা। এতে কুমোরেরাও লাভবান হবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy