শোকে মুহ্যমান দুর্ঘটনায় মৃত গোপী রামের (৩৫) পরিবার। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
গলিত গরম লোহা ছিটকে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) চিকিৎসাধীন আরও এক ঠিকাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বাকি আরও দুই জখম ঠিকাকর্মীর অবস্থাও আশঙ্কাজনক, জানা গিয়েছে চিকিৎসকদের সূত্রে। এ দিকে, গত রবিবারের ওই দুর্ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তিনটি তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার সকালে ডিএসপি-র ব্লাস্ট ফার্নেস বিভাগে হওয়া ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু পিন্টু বাউড়ি নামে এক ঠিকাকর্মীর। গুরুতর জখম অবস্থায় গোপী রাম (৩৫), প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত ঘোষ নামে আরও তিন ঠিকাকর্মীকে দুর্গাপুরের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মঙ্গলবার মৃত্যু হয় দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকার বাসিন্দা গোপীর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ২০১১ থেকে কারখানায় ঠিকাকর্মীর কাজ করতেন। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন, বাবা, মা, চার সন্তান ও স্ত্রী। গোপী পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। তাঁর ভাই গঙ্গা রাম এ দিন বলেন, “দাদার উপরেই পুরো সংসার নির্ভরশীল ছিল। এখন যদি কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই খুবই সমস্যায় পড়ব। পরিবারের এক জনকে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
দুর্ঘটনার পরে মঙ্গলবারও দেখা গিয়েছে শ্রমিক অসন্তোষ। সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন ইতিমধ্যেই শ্রমিক নিরাপত্তার দাবিতে এবং ডিএসপি-তে বার বার দুর্ঘটনার প্রতিবাদে সেল-এর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি, সিটু কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখার দাবি জানিয়েছে। সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, “আর যাতে কারাখানায় দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে কয়েকটি বিষয় জানিয়েছে।” আজ, বুধবার শ্রমিক নিরাপত্তা-সহ কয়েকটি বিষয়ে কর্মসূচিও নিয়েছে সিটু। এ দিন কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিক নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়ে দাবির কথা জানিয়েছেন তাঁরাও, জানান এআইটিইউসি নেতা শম্ভুচরণ প্রামানিক।
পাশাপাশি, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, ল্যাডেলে (যেখানে গরম গলিত লোহা ঢালা হয়) ‘লক’ থাকে। লকটি ঠিক ভাবে করা থাকলে গরল গলিত লোহা ল্যাডেলে ঢালার পরে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু যে ল্যাডেল উল্টে গলিত লোহা ছিটকে আসে, সেটি লক করা ছিল না।
কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায় বলেন, “ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানা, সেল ও রাজ্যের শ্রম দফতর তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি তৈরি করেছে। সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। এখনই সবটা বলা সম্ভব নয়। শ্রমিকদের দাবিগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy