Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বিস্কুট কারখানায় আগুন, সুরক্ষা পরীক্ষায় কমিটি

কর্মীদের দাবি, তিন পালিতে (শিফ্‌ট) টানা বিস্কুট তৈরির কাজ হয় এই কারখানায়। যন্ত্রের কোনও বিশ্রাম নেই।

আগুন নেভাচ্ছে দমকল। মঙ্গলবার শ্রীপুরে। নিজস্ব চিত্র

আগুন নেভাচ্ছে দমকল। মঙ্গলবার শ্রীপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:২০
Share: Save:

বিস্কুট কারখানায় আগুন লাগল জামুড়িয়ার শ্রীপুরে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, অনেক জিনিসপত্রই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার এই ঘটনার পরে তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে কমিটি গড়েছেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটি নানা কারখানার সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে বলে মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান।

কারখানার কর্মী মহম্মদ নিশাদ, সুরেশ বাউরি, মনোজ বাদ্যকরেরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ কাজ করার সময়ে হঠাৎ তাঁদের নজরে পড়ে, বিস্কুট তৈরিতে ব্যবহৃত জাল থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। নিশাদের অভিযোগ, ‘‘কর্মীরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে ধোঁয়া বেরোনোর খবর দেন। তখন কর্তব্যরত আধিকারিক জানান, জাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। গরমের জন্য ধোঁয়া বেরোচ্ছে। চিন্তার কারণ নেই।’’ কর্মীরা জানান, এর পরে খানিকক্ষণের মধ্যে ধোঁয়ার জায়গায় গলগল করে আগুন বেরোতে শুরু করে। দ্রুত তা কারখানার বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীরা জানান, সেই সময়ে ম্যানেজার অভয় মাঝির নির্দেশে তাঁরা দ্রুত কারখানা ছেড়ে বেরিয়ে যান।

কর্মীদের দাবি, তিন পালিতে (শিফ্‌ট) টানা বিস্কুট তৈরির কাজ হয় এই কারখানায়। যন্ত্রের কোনও বিশ্রাম নেই। তার জেরে সব সময় জালও গরম হয়ে থাকে। ছাঁচে ফেলে বিস্কুট তৈরি করার পরে তা জালের মাধ্যমে গরম করা হয়। তার পরে সেগুলি বাক্সবন্দি করে বাজারে পাঠানো হয়। জাল ঠান্ডা হলেই তা পরিষ্কার করার নিয়ম। কারণ, পরিষ্কার করার সময়ে মোম ব্যবহার করা হয়। জালের নীচে গ্যাসের আভেন থাকে। সেই আভেন চালু ছিল। মোম গরমে গলে গিয়ে আভেনে পড়ে বিপত্তি ঘটতে পারে, দাবি কর্মীদের একাংশের। এ দিন সে কারণেই আগুন ধরেছিল কি না, তা তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

কর্মীদের আরও দাবি, এ দিন ঠিক সময়ে কারখানার বাইরে না বেরোতে পারলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারত। জালের পাশে প্রচুর কার্ডবোর্ডের বাক্স রাখা ছিল। তা থেকে আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়ে বলে অনুমান। জাল পরিষ্কারের সময়ে সেগুলি সরিয়ে রাখা উচিত ছিল বলে মনে করছেন কর্মীদের অনেকে। এ দিনের ঘটনার পরে কারখানার অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, চারটি অগ্নি নিবার্পণ সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছড়ানোর চেষ্টা করা হলেও লাভ হয়নি। আরও সিলিন্ডার মজুত রাখা প্রয়োজন বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া কারখানার অনেক দরজা জাল দিয়ে আটকানো থাকে। তার জেরে আগুন লাগার পরে বেরোনো সহজ হয়নি বলে অভিযোগ কর্মীদের।

কারখানার ম্যানেজার অভয় মাজি বলেন, ‘‘আগুন লেগে বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।’’ তবে তাঁর দাবি, অগ্নি নিবার্পণের প্রচুর সিলিন্ডার মজুত ছিল। তবে সেগুলি কর্মীদেরই ব্যবহার করতে হত। কিন্তু প্রাণহানির ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য কর্মীদের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।

কয়েক মাস আগে জামুড়িয়ার যাদুডাঙার কাছে একটি থার্মোকলের কারখানায় আগুন লেগেছিল। বারবার কারখানায় আগুনের ঘটনায় তাঁরা চিন্তিত বলে জানান আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি জানান, পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল-সহ তিন জনকে নিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। তাঁরা এই সব কারখানায় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা-বিধি মানছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন। তার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Fire Jamuria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy