টানা বৃষ্টির পরে এমনই হাল জেলার নানা প্রান্তের খেতের। নিজস্ব চিত্র
বুলবুলেতে ধান খাবে কি না, এটাই এখন প্রশ্ন জেলার চাষিদের।
আবহাওয়া অফিস বলেছে, শুক্রবার রাত থেকেই উপকূলবর্তী জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাব শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে পূর্ব বর্ধমানেও। এই পরিস্থিতিতে চাষিরা জানান, মাঠে এখন ধান পেকে গিয়েছে। তা ঘরে তোলার সময়ও চলে এসেছে। কিন্তু এই বৃষ্টির জেরে খেতের ধান খেতেই মারা পড়বে কি না, আলু ও রবি শষ্যের চাষও পিছিয়ে যাবে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ে চাষিরা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক পরে থেকে আমন ধান কাটা শুরু হবে। ‘বুলবুলে’র জন্য ধান কাটা পিছিয়ে যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত কৃষি দফতর। জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুলবুলের জন্য ধান কাটা পিছিয়ে যাবে। মাঠ ভিজে থাকলে ধান কাটার পরেও, তা জমিতে রাখা যাবে না। এর ফলে নতুন করে জমি তৈরির কাজও পিছিয়ে যাবে।’’
শনিবার সকালে দেখা যায়, ভাতার-সহ বিভিন্ন খেত জমিতে টানা বৃষ্টির জেরে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ভাতারের পাড়ার গ্রামের মহেন্দ্র হাজরা, বেলেণ্ডা গ্রামের বাবলু শেখের দাবি, “অসময়ের এই বৃষ্টির জন্য আরআই ৩৬ ও মিনিকিট প্রজাতির ধান ক্ষতির মুখে পড়বে।’’ কাটোয়ার চরপাতাইহাটের জগন্নাথ সরকার, পঞ্চাননতলার মানব মণ্ডলেরাও মনে করেন, “নিচু জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে গাছের গোড়া পচে যাবে।’’ হাওয়ার বেগ বাড়লে ধান ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষি গলসির রামপুরের জয়দেব ঘোষ, বাহিরঘন্ন্যার শেখ মুজিবরেরাও।
পাকা ধানে মই কি দেবে বুলবুল? একাধিক ব্লকের কৃষিকর্তাদের দাবি, পরিস্থিতি বলছে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টির পরিমাণ এক থাকলে এবং তার সঙ্গে হাওয়ার বেগ বাড়লে ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁরা জানান, আলুর জমিতে কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না। জল জমলেও বার করে দিতে হবে। শক্তিগড়ের চাষি মহম্মদ সফিউদ্দিন মল্লিক, গুসকরার কমলনগরের প্রিয়বন্ধু মাজিদের দাবি, “ক্রমাগত বৃষ্টি হলে জল কী ভাবে বার করব? মাটি ভিজে যাওয়ার জন্য পোখরাজ জাতের আলু বীজ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’
জেলা কৃষি দফতরের দাবি, ২০১৭-১৮ সালে আমন মরসুমেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়েছিল। কিন্তু তাতে ফলন খুব মার খায়নি। সে বছর প্রতি হেক্টরে ৪.৬৩ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। গত বছরও একই ছবি দেখা গেলেও ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে ২০ লক্ষ টনের বেশি ধান হয়েছিল। আগের বছরের চেয়ে হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫.৩১ টন। সেই তথ্য তুলে ধরে জগন্নাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টির জন্য ধানে ক্ষতি হবে, এমন আশঙ্কা এখনই করছি না। তবে শনিবারের রাতের উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy