ফাইল চিত্র।
গত বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ত্রাণে অনিয়ম কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তার পরে শুক্রবার আসানসোল পুরসভার ডেপুটি মেয়র, এক কাউন্সিলর-সহ জেলায় দলের চার নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, এই চার নেতা হলেন— ডেপুটি মেয়র তবসসুম আরা, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বেবি খাতুন, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপা চক্রবর্তীর স্বামী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। যদিও এই চার জনই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
দল সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’ ও ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ পরবর্তী পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে নানা অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে তবসসুম, বেবি ও শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, প্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করার নামে ডিএসপি-র ঠিকাকর্মীদের থেকে টাকা তুলেছেন তিনি। অথচ, সেই টাকা (প্রায় ২০ লক্ষ) শ্রমিকদের নামে দান না করে নিজের একটি ‘অস্তিত্বহীন’ সংগঠনের নামে
দান করেছেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই এই নোটিস। তাঁদের কাছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। তা পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বড় থেকে ছোট— সব নেতা কর্মীকে এঁদের ভুল কাজের খেসারত দিতে হবে।’’
যদিও ডেপুটি মেয়রের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওঁদের অভিযোগ, ত্রাণ পৌঁছয়নি সর্ব স্তরে। এটা মিথ্যা অভিযোগ। শনিবারই জেলা সভাপতিকে জবাব দিয়েছি।’’ ত্রাণ বিলিতে অস্বচ্ছতার যে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে, তা ‘প্রমাণ করা হোক’, দাবি করেছেন শঙ্করবাবু। তাঁর আরও দাবি, ‘‘নোটিসে বলা হয়েছে, পুরসভা থেকে পাওয়া স্যানিটাইজ়ার আমি না কি বিক্রি করেছি! অথচ, কোনও স্যানিটাইজ়ার দেওয়াই হয়নি।’’ ত্রাণ বিলিতে অস্বচ্ছতার অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূল কাউন্সিলর বেবি খাতুন। শনিবার রাত পর্যন্ত কোনও কারণ দর্শানোর নোটিস তিনি হাতে পাননি বলেও দাবি তাঁর। আর দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা তথা আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। প্রকাশ্যে কিছু বলাটা ঠিক নয়। তবে আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অসত্য। সেটা লিখিত ভাবে জানাব।’’
এ দিকে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘এটা প্রমাণ করল, ত্রাণ-দুর্নীতির যে অভিযোগ আমরা এত দিন করে আসছিলাম, সেটা পুরোপুরি সত্য। আর তাতে তৃণমূল নেতারাই জড়িত।’’ সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও বলেন, ‘‘এ সব কারণ দর্শানোর নোটিস লোক দেখানো। তৃণমূল— পুরো দলটাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নেতা, কর্মীদের কোথাও কিছু ভুল হয়ে থাকলে, তা সংশোধন করতে পারে আমাদের দল। দুর্নীতির সঙ্গে আমরা আপস করি না। আর এই সরকার দুর্যোগের সময়ে, যে ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা উদাহরণ হয়ে থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy