Advertisement
০২ জুলাই ২০২৪
Cyclone Amphan

ঝড়ে ক্ষতিতে টাকা পাননি বেশির ভাগই

ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর জেরে পূর্ব বর্ধমানে আরও ১০,৬৩৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত।

এখনও পর্যন্ত আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোনও টাকা আসেনি।

এখনও পর্যন্ত আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোনও টাকা আসেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০২:১২
Share: Save:

সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ২,০৯৪টি বাড়ি। কিন্তু মাত্র পাঁচ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণ পৌঁছেছে। আবার যে সব মৌজায় বোরো ধানে ক্ষতি হয়েছে, ‘কৃষকবন্ধু’র আওতায় থাকা সেই চাষিরাও এককালীন ক্ষতিপূরণ পাবেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টেও সোমবার পর্যন্ত টাকা ঢোকেনি। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীর অবশ্য দাবি, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি ক্ষতিগ্রস্তেরারা ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন।’’

ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর জেরে পূর্ব বর্ধমানে আরও ১০,৬৩৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ওই বাড়িগুলি নতুন ভাবে তৈরি করার জন্য উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া, একশো দিনের প্রকল্পে বাড়ি তৈরির মজুরি বাবদ ২৮ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বাড়ি তৈরির ক্ষতিপূরণ বাবদ জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা চলে এসেছে। তবে এখনও পর্যন্ত আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোনও টাকা আসেনি।

জেলা প্রশাসনের দাবি, ক্ষতিপূরণ নিয়ে যাতে কোনও ‘রাজনীতি’ না হয়, সে জন্য ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সব আবেদন খতিয়ে দেখছে। এলাকা ঘুরে বিস্তারিত রিপোর্ট করা হচ্ছে। ব্লকের নজরদারি কমিটির চোখে কোনও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অথচ আবেদন করেননি, সে সব নামও তালিকায় তোলা হয়েছে। তেমনই আংশিক ক্ষতির পরেও সম্পূর্ণ ক্ষতির জন্য আবেদন করেছে, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “খুঁটিয়ে ও নিবিড় ভাবে খতিয়ে দেখার জন্য সামান্য দেরি হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কোনও ভাবেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বাদ যাক, সেটা করতে দেওয়া যাবে না।’’

এ ছাড়া, বাংলা আবাস যোজনায় জেলায় আরও ২১,৬০৯টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন এসেছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, সম্পূর্ণ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, এমন প্রাপকদের নাম আর্থ-সামাজিক তালিকায় থাকলে তাঁদের বাংলা আবাস যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়ার সম্ভাবনা কমবে।

কৃষি দফতরের হিসেবে, ১৫টি ব্লকের ১,২২৬টি মৌজায় বোরো ধানে ক্ষতি হয়েছে। জেলাশাসক ক্ষতিগ্রস্ত মৌজা ধরে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। সরকার ঠিক করেছে, ‘বাংলা শস্য বিমা’, ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য ছাড়া, শুধু ‘আমপান’-এর জন্য ক্ষতি হয়েছে এমন চাষিদেরও এককালীন পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। তবে ‘কৃষক বন্ধু’ ‘পোর্টাল’-এ নাম থাকতে হবে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’লক্ষ চাষি এই অনুদান পাবেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সোমবার ব্যাঙ্কের কাছে সমস্ত তথ্য চলে গিয়েছে। দু’-একদিনের মধ্যেই চাষিরা টাকা পেতে শুরু করবে বলে কৃষি দফতরের দাবি। জেলাশাসক জানিয়েছেন, চাষে ক্ষতিপূরণ বাবদ পূর্ব বর্ধমান জেলা ৩৬ কোটি টাকা দাবি করেছে।

বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর কথায়, “কেন্দ্র সরকার আর্থিক অনুদান দিচ্ছে, কড়া নজর রাখার জন্য নিচুতলায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষের দাবি, “কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজনীতি করলেই গরিব মানুষরা চেপে ধরবেন।’’ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (ত্রাণ) মিঠু মাঝির কথায়, “প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদেরই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসন সে কাজই করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE