Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Amhan

এ বার ক্ষতিপূরণ পাব তো, প্রশ্ন লাইনে দাঁড়িয়ে

রাজ্যের আটটি জেলা থেকে দ্বিতীয় দফায় আবেদন নেওয়া হচ্ছে।

আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে মেমারি ১ ব্লক অফিসে। নিজস্ব চিত্র

আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে মেমারি ১ ব্লক অফিসে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

কেউ সন্তানকে কোলে নিয়ে, কেউ লাঠি হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বারবার বৃষ্টিতে ভিজছেন। সিভিক ভলান্টিয়াররা প্রতিটি ‘ড্রপ বক্সে’র সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ঠেলাঠেলি, হুড়োহুড়ি নেই। ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এ ক্ষতিপূরণের জন্য দ্বিতীয় বার আবেদন জমা নেওয়ার দ্বিতীয় দিনে শুক্রবারই কাটোয়া, কালনা, মেমারি, মন্তেশ্বর, খণ্ডঘোষ—সর্বত্র একই ছবি।

রাজ্যের আটটি জেলা থেকে দ্বিতীয় দফায় আবেদন নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, প্রথম দিন বিকেল ৪টে পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ছ’টি পুরসভা মিলিয়ে মাত্র ২৫৯টি আবেদন জমা পড়ে। শুক্রবার সকাল থেকেই অবশ্য লাইন পড়ে যায় ব্লক অফিসগুলিতে। বৃহস্পতিবার মেমারি ১ ব্লক ও পুরসভা মিলিয়ে ৭৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেখানে শুক্রবার জমা পড়েছে ১,৪১১টি আবেদন। কেতুগ্রাম ২ ব্লকে শুক্রবার ৪৪৯টি জমা পড়ে। আবেদনকারীদের একটা বড় অংশের দাবি, প্রথম দফায় আবেদন করেও বাড়ির ক্ষতিপূরণ তাঁরা পাননি। তাই বৃষ্টি, করোনা সংক্রণের ভয় নিয়েও লাইনে দাঁড়িয়েছেন। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, আবেদনপত্রে ত্রুটি বা ভুয়ো আবেদন বাতিল করা হচ্ছে।

মেমারি, মন্তেশ্বর, গলসি, আউশগ্রাম-সহ বিভিন্ন ব্লকে আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন চন্দনা বিবি, শক্তি হাঁসদাদের মতো অনেকেই। তাঁদের দাবি, “ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জমা নেওয়ার কথা পঞ্চায়েত থেকে আমাদের জানানোই হয়নি। শেষ মূহুর্তে খোঁজ পেয়ে ব্লকে ছুটেছি।’’ লাঠি হাতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন খণ্ডঘোষের চিনুরানি খাঁড়া। তাঁর দাবি, “আমপানে আমার বাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অথচ, টাকা পাইনি। অনেক দূর থেকে এসেছি।’’ মন্তেশ্বরের পুতুল হালদারের কথায়, “গত বার আবেদন করেও ক্ষতিপূরণ পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী ফের আমাদের কথা ভেবেছেন।’’ আবার ভাদু রায়, প্রশান্ত মাঝি, চায়না বিবিদের অভিযোগ, “গত বার ক্ষতি হয়নি এমন অনেকে টাকা পেয়ে গিয়েছেন।’’

এ জেলাতেও ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। জেলা প্রশাসন সরেজমিন তদন্ত, ছবি-সহ রিপোর্ট করার জন্য ব্লক স্তরে নির্দেশ দেয়। এ বার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, এসডিও-দের তদারক করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। এ দিন বিকেলে ওই আধিকারিকদের সামনে ‘ড্রপ বক্স’গুলি খোলা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এত দিন পরে অনেকেই ক্ষতিপূরণ না পেয়ে সাধ্যমতো বাড়িঘর মেরামত করে নিয়েছেন। এখন আবেদন জমা পড়ার পরে তদন্ত কী সঠিক ছবি মিলবে? প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কাদের পাকা বাড়ি সেটা বোঝা যাবে। আর কাঁচা বাড়ি মেরামত করলেও বোঝা সম্ভব।’’

আবেদনকারীদের একাংশ অবশ্য সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। তাঁদের প্রশ্ন, “আগের বার ক্ষতিপূরণ পাইনি। কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছি। এ বার তালিকায় নাম থাকবে তো?’’ জেলা প্রশাসনের আশ্বাস, প্রতিটি আবেদন ধরে সরেজমিন তদন্ত হবে। ১২ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে। চূড়ান্ত তালিকা ব্লক দফতর ও ‘এগিয়ে বাংলা’ ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। তবে জেলার কিছু জায়গায় আবেদন জমা দেওয়ার ভিড় হয়নি। জামালপুরে ৪৮ জন, রায়না ২ ব্লকে ১২ জন আর মেমারি ২ ব্লকে ৩৭ জন আবেদন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। কাটোয়া শহরে অনিয়মের একাধিক অভিযোগ উঠলেও এ দিন আবেদন জমা পড়ে ৩৭টি।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amhan Cyclone Compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy