শিলাবৃষ্টিতে নুইয়ে পড়েছে ধানগাছ, মন্তেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
বোরো ধান তোলার মুখে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছেন চাষিরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কালনা ও কাটোয়া মহকুমার বহু জমির পাকা ধান ঝরে পড়েছে মাটিতে। ক্ষতি হয়েছে আনাজ, পাট, তিল চাষেও।
পূর্ব বর্ধমানে এক লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। প্রায় ২৫ শতাংশের কাছাকাছি ধান কাটাও হয়েছে। চাষিরা জানান, মাসখানেক দেরিতে চাষ শুরু হওয়ায় কাটাও দেরিতে হচ্ছে। ফলে, প্রতিবার দু’-একটা কালবৈশাখীর মুখোমুখি হতে হলেও, এ বার লাগাতার দুর্যোগ চলছে। ভারী বৃষ্টি, ঝড় জল জমে যাচ্ছে জমিতে। জমা জলেই লুটিয়ে পড়ছে ধান। আবার কাদায় ভরা জমিতে ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ যন্ত্রও নামানো যাচ্ছে না।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর ব্লকের পিপলন, মাঝেরগ্রাম, কাইগ্রাম, দেনুরের বহু জমিতে ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ ৯,২৭৫ হেক্টর জমি। পূর্বস্থলী ২ ব্লকেও ক্ষতি হয়েছে ৩,০৬৩ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া, এই ব্লকের পাটের ৮০০ হেক্টর জমি এবং ২০০ হেক্টর তিলের জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে, দাবি কৃষি দফতরের। কর্তারা জানান, পূর্বস্থলী ১ ব্লকে ধান নষ্ট হয়েছে ৩,৫৭৫ হেক্টর জমিতে। কাটোয়া মহকুমাতেও জগদানন্দপুর, গাজীপুর এবং অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েত এলাকায় ১১০ হেক্টর ধান, ৯৫ হেক্টর পাট এবং ৯৪ হেক্টর তিল চাষের জমিতে ক্ষতি হয়েছে। জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, গত কয়েক দিনে টানা ঝড়বৃষ্টিতে জেলায় ৩১,৭১৫ হেক্টর জমির ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কাটোয়া, কালনা, মন্তেশ্বর-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৫,৮০০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রিপোর্ট এসেছে।
কৃষি দফতরের আশঙ্কা, জমিতে জল জমে যাওয়ায় ধানের ক্ষতি হবে। জল না বার করলে যন্ত্রের সাহায্যে ধান তোলাও যাবে না। এর সঙ্গেই ধানের কল বেরিয়ে যাওয়া এবং রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে তাঁদের অনুমান। জেলার অন্যতম সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষিরা দিশাহারা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দ্রুত বিমা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি।’’ মন্তেশ্বরের কৃষি আধিকারিক কনক দাসও বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, দুর্যোগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জমির ছবি বিমা সংস্থার কাছে পাঠাতে হয়। চাষিরা যেন তা করেন।’’
মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘প্রায় ৮০ শতাংশ চাষি বিমার আওতায় চলে এসেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাঁরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবে সরকার। তবে চাষিদেরও উদ্যোগী হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy