ওয়েবসাইটে রক্তের তালিকা। নিজস্ব চিত্র
রক্তের আকালে ভুগছে আসানসোল শিল্পাঞ্চল। পরিস্থিতি এমনই যে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদেরও প্রয়োজন মতো রক্তের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় রক্তের ঘাটতি মেটাতে ছোট ছোট রক্তদান শিবির করার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির কর্মকর্তারা।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, বর্তমানে (হিসেব ১৬ ডিসেম্বরের) ‘এ’, ‘বি’, ‘এবি’ এবং ‘ও’ পজ়িটিভ গ্রুপের মোট রক্ত রয়েছে যথাক্রমে ৬, ১, ০, ০। আর নেগেটিভ গ্রুপের সব রক্তই শূন্য। রক্তের আকাল কেন? আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানান, জেলা হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন খুব কম করে ৫০ বোতল রক্ত সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে ৩৫ থেকে ৪০ বোতলের বেশি রক্তের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চলতি বছরে কম-বেশি ১৭ হাজার বোতল রক্তের দরকার। এ জন্য সাড়ে চারশো শিবির করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গত মার্চ থেকে প্রায় সাত মাস করোনা-পরিস্থিতির জেরে খুব বেশি শিবির করা যায়নি। তাই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে ছোটো ছোটো শিবিরের মাধ্যমে রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করেছি।’’
গত মাসে আসানসোলের পুলিশ লাইন এলাকায় একটি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে রক্তদান শিবির করা হয়েছিল। আসানসোলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় সাড়ে সাতশো জন রক্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই শিবির থেকে মাত্র ৭২ বোতল রক্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে জমা হয়। বাকি রক্ত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের রামপুরহাট-সহ অন্য জেলায় পাঠানো হয়। কারণ, এত রক্ত সঞ্চয় করে রাখার মতো পরিকাঠামো জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে নেই বলে আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে। ফলে, দান করা রক্ত নষ্ট না করে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।
যেখানে পরিকাঠামোর অভাব, সেখানে এ ভাবে বড় মাপের শিবির করার সমালোচনা করেছেন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধারেরা। যেমন, ‘ফেডারেশন অব ভলান্টারি ব্লাড ডোনেশন অর্গানাইজ়েশন’-এর প্রাক্তন রাজ্য সহ-সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এক বার এত বড় শিবির না করে মাস কয়েক ধরে ছোট ছোট শিবিরের মাধ্যমে ওই দাতাদের রক্ত সংগ্রহ করা হলে, পুরো রক্তই আসানসোল জেলা হাসপাতালে জমা করা যেত। শিল্পাঞ্চলে রক্তের আকালও হত না।’’
এ দিকে, রক্তের আকাল সামাল দিতে চিকিৎসক ও কর্মীরা যেমন নিজেরাই রক্ত দিচ্ছেন। তেমনি ব্যক্তিগত সম্পর্কের জোরে পরিচিতদের ব্লাড ব্যাঙ্কে নিয়ে এসে রক্ত দান করাচ্ছেন। কিন্তু এ ভাবে বেশি দিন চালানো সম্ভব নয় জানিয়েছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জীববাবু। তিনি জানান, যে সাড়ে সাতশো জন সে দিন রক্ত দিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে একটি করে ডোনার কার্ড পেয়েছেন। ব্লাড ব্যাঙ্কে তাঁরা ওই কার্ড দেখালেই তাঁদের প্রয়োজনীয় রক্ত পাওয়ার কথা। অর্থাৎ, চাহিদা যেখানে সাড়ে সাতশো বোতল সেখানে ব্লাড ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে মাত্র ৭২ বোতল রক্ত। ফলে, চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই অবস্থায় বড় শিবির না করে ছোট ছোট শিবির করেই রক্ত সংগ্রহ
করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy