শ্রমিকনগরে সিপিএমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরের বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা, ফুচকা বিক্রেতা রামপ্রসাদ সরকারের (৪৫) ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র ঘটনায় ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেছে। বুধবার তাদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে, আট দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এ দিকে, এ দিন ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে এবং দোষীদের সবাইকে গ্রেফতারের দাবিতে শ্রমিকনগরে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপ্রসাদ সোমবার রাতে ভাইয়ের বাড়ি শ্রমিকনগরে যান। সেখানে তিনি মত্ত অবস্থায় অনন্ত জানা নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধের খোঁজখবর করতে গিয়ে অশালীন শব্দ প্রয়োগ করেন এবং কথা কাটাকাটির সময় অনন্তের বুকে চড়ে বসেন বলে অভিযোগ বৃদ্ধের পরিবারের। এর জেরে অনন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে, রামপ্রসাদ নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় সুকান্তপল্লির কাছ থেকে বৃদ্ধের পরিবারের লোকজন আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে রামপ্রসাদকে ধরে নিয়ে যান শ্রমিকনগরের একটি মাঠে। সেখানে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাড়ি ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রামপ্রসাদের ভাই বাপ্পা। পুলিশ অনন্তের ছেলে বিশ্বজিৎ জানা, সুরজিৎ সরকার ও মনোরঞ্জন দাস নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ ঘটানো (আইপিসি ৩৪) এবং খুনের মামলার (আইপিসি ৩০২) ধারা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় রাজনীতির রংও লেগেছে। বাপ্পার অভিযোগ, “ঘটনার সময় কাউন্সিলর শিপুল সাহা এলাকায় থাকলেও, তিনি সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।” মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার দাবি করেন, “পিটিয়ে খুন করা হয়েছে রামপ্রসাদকে। অভিযুক্তেরা সবাই তৃণমূল কর্মী, এলাকার কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ।” যদিও স্থানীয় ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল সাহা দাবি করেন, দু’পক্ষই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।
সিপিএমের পক্ষ থেকে শ্রমিকনগরে ‘নিহতের’ ভাইয়ের বাড়ির সামনে এ দিন বিকেলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, রুনু দত্ত, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার প্রমুখ। পঙ্কজ বলেন, “বহু কষ্ট করে ফুচকা বিক্রি করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন রামপ্রসাদ। তাঁর মৃত্যুর ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক। রাজনৈতিক রং বিচার না করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy