বাংলো-সহ জমি ক্রোক করার নির্দেশ। —নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির দাম না মেটানোয় পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের বাংলো ক্রোক করার নির্দেশ দিল আদালত। বর্ধমান শহরের সাধনপুর এলাকায় বাগান, ফাঁকা জমি এবং ভবন-সহ পুরো এলাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ কার্যকর করার জন্য জেলা আদালতের নাজিরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিলেন বিচারক। পাশাপাশি, ক্রোকের পর বাংলোটি যাতে নিলামে বিক্রি করা যায়, তার বাজারদরও জানতে বলা হয়েছে। আগামী ১৯ জুলাই এই ব্যাপারে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আদালত সূত্রে খবর, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ২০০৩ সালে কিছু জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। পশ্চিম বর্ধমানের কাঠপুকুর মৌজায় কলকাতার সরশুনা থানার হো চি মিন সরণির বাসিন্দা জনৈক সুশান্ত গোস্বামীর ০.৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমির মূল্য স্থির হয় ২৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৪০ টাকা। যদিও সরকার সেই টাকা মেটায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে প্রশাসনের নানা মহলে দরবার করেন। যদিও তাতে কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে জমির মূল্য বাবদ নির্ধারিত টাকা পেতে তিনি ২০১৩ সালে এই মামলাটি করেন। সেই সময় আদালত জমির মূল্য বাবদ ৫৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরেও সরকার জমির মূল্য বাবদ প্রাপ্য টাকা মেটায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। নির্দেশ কার্যকর করতে ২০১৫ সালে আবার আদালতের দ্বারস্থ হন জমিমালিক। সেই থেকে মামলাটি বর্ধমানের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে চলছিল। তার মধ্যে জমির মালিক মারা গেলে তিন উত্তরাধিকারী মিতালি গোস্বামী, পার্থসারথি গোস্বামী এবং সিদ্ধার্থ গোস্বামী ওই মামলাটি চালিয়ে যান।
চলতি বছরের ১২ এপ্রিল আদালত জমির মূল্যবাবদ মালিককে এক কোটি ৯৯ লক্ষ ৭০ হাজার ৭৯০ টাকা ১৭ মে, শুক্রবারের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশও মানেনি সরকার। শুক্রবার শুনানির শুরুতে সরকারের তরফে ১২ এপ্রিলের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার জন্য আরও দুই মাস সময় চাওয়া হয়। অন্য দিকে, সিদ্ধার্থ আইনজীবী হওয়ায় তিনি নিজেই সওয়াল করেন। সরকার পক্ষের সময় চাওয়া নিয়ে তিনি আপত্তি করেন। দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পর আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, ২০১৫ সাল থেকে মামলাটি ঝুলে রয়েছে। আগের শুনানিতেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে সরকারপক্ষকে আর সময় দেওয়া হবে না। তার পরেও রায় কার্যকর করা নিয়ে সময় দিলে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হবে মামলাকারীকে। তার পরেই সরকার পক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ৩.০৪ একর জমির উপর তৈরি জেলাশাসকের বাংলো ক্রোক করার নির্দেশ দেন বিচারক। বর্ধমানের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ এই নির্দেশ দেন।
এই ঘটনা নিয়ে জেলাশাসক কে রাধিকা আয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হলে তিনি জানান, আইন অনুযায়ী তাঁরা আদালতে আবেদন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy