ফুলের যত্ন নিতে ব্যস্ত এক চাষি, শ্রীরামপুরে। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এ ফুলের বাজারকে ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কলকাতা, হাওড়ার বাজার পর্যন্ত ফুল কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হবে, ক্রেতাদের মধ্যে কতটা চাহিদা থাকবে ফুল কেনার, তা নিয়ে চিন্তিত কালনা মহকুমার ফুলচাষিরা। তাঁদের দাবি, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ, ধর্মস্থানেও চাহিদা কম, ফলে ফুল বাজারে নিয়ে গেলেও খরচ উঠবে না।
গতানুগতিক চাষ ছেড়ে গত এক দশকে পূর্বস্থলী, কালনার বহু চাষি ফুল চাষ শুরু করেছেন। অনেকে ‘পলিহাউস’, ‘নেট হাউস’ গড়েও চাষ করেন। তাঁদের দাবি, বেশ কিছু ফুল বিয়ে-সহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে লাগে। আবার কিছু কিছু ফুলের চাহিদা থাকে দৈনন্দিন পূজার্চনার কাজে। কিন্তু ‘লকডাউন’-এর পরে, ফুল বিক্রি তলানিতে নেমে যায়। জমিতেই নষ্ট হয়ে যায় বহু চাষির ফুল।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বেতপুকুর এলাকার চাষি পরিতোষ দেবনাথের কথায়, ‘‘আমার ফুল চাষের জন্য দুটি পলিহাউস এবং একটি নেটহাউস রয়েছে। সেখানে জারবেরা চাষ হয়। এই সময় জারবেরার ভাল দামও মেলে। কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রায় ১২ হাজার ফুল ফেলে দিতে হয়েছে।’’ তিনি জানান, সামনেই পয়লা বৈশাখ। অন্য বছর এই দিনে ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকে। এখন সরকারি ভাবে ফুলের বাজার খুলে দেওয়া হলেও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ। দোকানপাট খোলা নেই। এ বার কতটুকু ফুলের চাহিদা থাকবে তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে।
ফুল চাষিদের দাবি, জারবেরার মতো কয়েক ধরনের ফুলের পাপড়ি যাতে ঝরে না পড়ে সে জন্য ট্রেনে বিশেষ প্যাকেট করে কলকাতা, হাওড়ার বাজারগুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বার ট্রেন না চলায় সেই সুযোগ নেই। আবার গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে খরচ বেশি পড়বে। শ্রীরামপুর এলাকার গাঁদা ফুলের চাষি কালীপদ মণ্ডল, হরিপদ মণ্ডলেরা জানান, মন্দিরগুলিতে ভক্ত সমাগম বন্ধ। যাঁরা বাজার থেকে পুজোর ফুল কিনে বাড়িতে পুজো করেন তাঁরাও ঘরবন্দি। তাই ফুল বিক্রি কতটা হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। নদিয়া থেকে খেয়াঘাট পেরিয়ে গাঁদা, রজনীগন্ধার মতো প্রচুর ফুল আসে কালনার বাজারে। অনেকে রাস্তায় ঘুরেও ফুলের মালা বিক্রি করেন। ফেরি পারাপার বন্ধ হওয়াই ভিন্ জেলার ফুল বিক্রেতারাও আসতে পারছেন না। তাঁদেরই এক জন রমেন সরকার বুধবার বলেন, ‘‘সরকার তো ছাড় দিয়েছে, কিন্তু খরিদ্দার কোথায়!’’
মহকুমা উদ্যানপালন আধিকারিক পলাশ সাঁতরা জানান, ফুল বিক্রিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর পরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার দিকে নজর রয়েছে দফতরের।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy