আপাতত বিকল্প নানা জীবিকা বেছে নিয়েছেন অনেকেই। ছবি: উদিত সিংহ
করোনা মোকাবিলায় জারি করা ‘লকডাউন’-এর জেরে সঙ্কটে নানা জীবিকা। অত্যাবশ্যক পণ্য ছাড়া বাকি সব জিনিসে দোকানপাট, ব্যবসা বা কাজকর্ম বন্ধ। টান পড়ছে সঞ্চিত পুঁজিতে। পেট চালাতে আপাতত নিজের পেশা ছেড়ে অনেকেই ঝুঁকছেন অন্য পেশায়। কেউ টোটো চালানো ছেড়ে আনাজ বিক্রি করছেন। কারও জুতোর দোকান বন্ধ থাকায় বিক্রি করছেন ফল।
বর্ধমান শহরের বড়বাজারে দীর্ঘদিন প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন দীনবন্ধু দে। কিন্তু এখন দোকান বন্ধ। সংসার চালাতে তিনি সেই বন্ধ দোকানের সামনেই লেবু বিক্রি করছেন। বাবুরবাগের প্রশান্ত দে জানান, টোটো চালিয়ে তাঁর দৈনিক গড়ে ৫০০ টাকা রোজগার ছিল। এখন চাকা গড়াচ্ছে না। সপ্তাহখানেক আগে তারাবাগ এলাকায় বসে আনাজ বিক্রি করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘শ’দুয়েক টাকা রোজগার হয়ে যাচ্ছে। পেটটা তো চলছে।’’
রাজবাটী এলাকার উত্তরফটকে জুতোর দোকান ছিল মহমদ মিরাজ দফাদারের। তিনি জানান, ‘সেল’-এর সময় দম ফেলার সময় থাকে না। কিন্তু এ বার তা বন্ধ। দোকানের সামনেই এখন ‘মাস্ক’ বিক্রি করছেন তিনি। বর্ধমানের উদয়পল্লি বাজারে মহিলাদের জামাকাপড় তৈরির দোকান অঞ্জনা দত্তের। তিনি এখন বাড়িতে তৈরি কাপড়ের ‘মাস্ক’ বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘‘তুলনায় অনেক কম রোজগার হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই এখন!’’ রথতলা এলাকার আখের রস বিক্রেতা ধীরেন বারুই এখন তরমুজের ব্যবসা করছেন।
বর্ধমানের গোলাপবাগ এলাকায় প্রচুর মেস রয়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর ছাত্রছাত্রী সেগুলিতে থাকতেন। তারই কয়েকটি খাবার সরবরাহের কাজ করতেন গোবিন্দ দাস। ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি চলে যাওয়ায় এখন মেস ফাঁকা। আপাতত ছেলেকে নিয়ে ঘুরে-ঘুরে আনাজ ফেরি করছেন গোবিন্দবাবু। জিটি রোডের ধারে কাঠগোলা মোড় এলাকায় সমস্ত আসবাব তৈরির দোকানে এখন ঝাঁপ পড়েছে। সেগুলির কর্মীরা এখন কর্মহীন। কাঠের মিস্ত্রি, নন্তু দাস, পিন্টু ভুঁইমালিরা জানান, তাঁরা অন্য জীবিকার খোঁজে নেমেছেন। মাছ বা আনাজ বিক্রির চেষ্টা করছেন কেউ-কেউ।
শহরের টোটো চালক প্রশান্ত দে বলেন, ‘‘অনেকেই এখন কাজ না পেয়ে আনাজ বেচছেন। কিন্তু শহরে আনাজের ক্রেতা তো রাতারাতি বাড়েনি। তাই বিক্রি কম হচ্ছে।’’ এই সব জিনিসের পুরনো ব্যবসায়ীদের দাবি, অনেকে এখন বিকল্প ব্যবসা হিসাবে মাছ, আনাজ বা মাস্ক বিক্রি বেছে নেওয়ায় সকলেরই আয় কমেছে। এ ব্যাপারে সরকারি পদক্ষেপের দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার বক্তব্য, ‘‘ফুচকা বিক্রেতাদের জন্য আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করার চিন্তাভাবনা হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে সরকার বাকিদের নিয়েও যেন চিন্তাভাবনা করে, আমরা সে মর্মে আবেদন জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy