পড়ে রয়েছে মেলার জিনিসপত্র। নিজস্ব চিত্র
মেলা চলাকালীন ‘লকডাউন’ হয়েছিল। তাই জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেননি কাঁকসার দানবাবার মেলায় আসা ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যের প্রায় ৪০ জন দোকান-মালিক। এমনকি, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতেও লোক না মেলায় দোকানের কাঠামো সরানো যাচ্ছে না। মেলা কমিটি ওই দোকান মালিকদের পাশে দাঁড়ানোয় খানিকটা স্বস্তি মিলেছে। তবে দ্রুত এই পরিস্থিতি মুক্তি দরকার, জানাচ্ছেন ওই দোকান-মালিকেরা।
মেলাটি শুরু হয়েছিল ৯ মার্চ। মার্চের শেষ পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ ‘লকডাউন’ ঘোষণা হতেই মেলা বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে থেকে দোকান মালিকদের একাংশ তাঁদের পসরা নিয়ে রয়ে গিয়েছেন মেলা চত্বরেই। কর্মীর অভাবে দোকানের কাঠামো পর্যন্ত খুলতে পারেননি। বৈদ্যুতিন নাগরদোলা, খেলনা থেকে নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর দোকান, সবই পড়ে রয়েছে মেলার মাঠেই। কী ভাবে সব গুছিয়ে বাড়ি ফেরা যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান মালিকেরা। মুর্শিদাবাদের দোকান মালিক নাসিম শেখ বলেন, ‘‘কবে যে বাড়ি ফিরতে পারব জানি না। মেলা কমিটি পাশে রয়েছে। তাই দিন চলে যাচ্ছে।’’ বেশ কয়েকজন দোকানদার জানান, লকডাউন শিথিল হওয়ার পরেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। স্থানীয় এলাকায় দোকানের কাঠামো খোলার মতো লোকজন অমিল। অন্য জেলা বা রাজ্য থেকে লোকজন আনার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। কারণ প্রথমত, যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, অন্য কোথাও থেকে এলে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। এ ছাড়া, এই দোকান মালিকদের একাংশ এক মেলা থেকে অন্য মেলায় যাতায়াত করেন বছরভর। এখন, হঠাৎ করে বাড়ি ফিরতে পারলেও জিনিসপত্র রাখার মতো জায়গা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু দিন আগে সৈয়দ শাহ পাহাড়ি নামে এক ফকির বাইরে থেকে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন কাঁকসায়। তিনি তাঁর ধনী ভক্তদের কাছ থেকে দক্ষিণা নিয়ে তা বিলিয়ে দিতেন দুঃস্থদের মধ্যে। তা থেকেই এলাকায় তিনি ‘দানবাবা’ নামে পরিচিত হন। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষজন তাঁর ভক্ত ছিলেন। ফকিরের মৃত্যুর পরে, স্থানীয় জমিদার তথা পানাগড়ের বাসিন্দা দেবেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বিঘা জমি দান করেন। সেই জমিতেই গড়ে ওঠে দানবাবার মাজার। ১৯৬০-তে দানবাবারে মাজারে মেলা শুরু হয়। সাধারণত, সাত দিন ধরে চলে মেলা। তবে তার পরেও দোকানপাট থাকে কিছু দিন। জেলা, ভিন্ জেলার নানা জায়গা থেকে মানুষ এই মেলায় আসেন।
পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছে মেলা কমিটিও। কমিটির সদস্য সদস্য পীরু খান বলেন, ‘‘মাঝপথে মেলা বন্ধ হয়ে যায়। তার উপরে প্রায় ৪০ জন দোকান-মালিক ফিরতে পারেননি। তাঁদের জিনিসপত্র আগলে রাখা, খাবারের ব্যবস্থা করা-সহ সবই করছে কমিটি। এ ছাড়া, উপায় নেই।’’ তিনি জানান, ওই দোকানদারদের জন্য বিকল্প কাজের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যেমন, কেউ পানাগড় শিল্পতালুকে ঠিকাকর্মীর কাজ করছেন। যাঁরা নির্মাণকাজ জানেন, তাঁদের জন্য রাজমিস্ত্রির কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মেলা চত্বরে পানীয় জলের সমস্যা ছিল। সেখানে নলকূপ বসানো হয়েছে। তবে দোকানদারদের এই মুহূর্তে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy