প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-এর মধ্যে স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল, আলু বিলির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। আজ, সোমবার থেকে সেই সব সামগ্রী দেওয়া হবে। কিন্তু ‘লকডাউন’-এর মধ্যে কী ভাবে স্কুল থেকে দূরে থাকা এলাকার শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে আসবেন, তা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। তবে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর জানিয়েছে, তাঁদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু, অন্য জেলা থেকে পশ্চিম বর্ধমানে আসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা কী ভাবে বাস পাবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বলে মত শিক্ষক সংগঠনগুলির।
সম্প্রতি শিক্ষিকা ও শিক্ষকদের স্কুলে পৌঁছনোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে চিঠি দিয়েছিল নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)। তবে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল বলেন, ‘‘আসানসোল ও দুর্গাপুর, দু’টি মহকুমা থেকে পাঁচটি করে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে বাস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাড়ায়-পাড়ায় যাবে। তাতে করেই তাঁরা স্কুলে আসবেন। স্কুল থেকে ফেরার সময়ে আবার সেই জায়গাতেই তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হবে।’’ এর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগও করা হয়েছে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতাতেই সব ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান অজয়বাবু।
বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ এপ্রিল জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানানো হয়, ২০ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের সামগ্রী অভিভাবকদের দিতে হবে। প্রাথমিক ভাবে ২০ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে শ্রেণি ভাগ করে চাল, আলু বিতরণ সেরে ফেলতে হবে। সেই মতো, সোমবার প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণি, মঙ্গলবার দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ, বুধবার তৃতীয় ও সপ্তম শ্রেণি এবং বৃহস্পতিবার চতুর্থ ও অষ্টম শ্রেণির জন্য মিড-ডে মিল দেওয়ার দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই দিনগুলিতে যে অভিভাবকেরা আসতে পারবেন না, তাঁদের জন্য বাকি দিনগুলিকে হাতে রাখা হয়েছে। নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়, রবিবার স্কুলে গিয়ে মিড-ডে মিলের প্যাকেট তৈরি করতে হবে। কোনও পড়ুয়াকে স্কুলে আসতে দেওয়া যাবে না। স্কুলে পর্যাপ্ত ‘স্যানিটাইজ়েশন’-এর ব্যবস্থা রাখতে হবে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানে মোট ১,৩০৮টি স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়।
তবে রবিবার ব্যক্তিগত উদ্যোগেই স্কুলে আসতে হয়েছে বলে জানান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমি দুর্গাপুরে থাকি। মানকরে স্কুল। মিড-ডে মিলের চাল, আলু প্যাকেটবন্দি করতে রবিবার স্কুলে যেতে হয়। স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে করে স্কুলে গিয়েছি।’’ তবে, নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (এবিপিটিএ) নেতা অনির্বাণ বাগচীর বক্তব্য, ‘‘ভিন্-জেলা থেকে অথবা এক মহকুমা থেকে অন্য মহকুমায় যাতায়াত করা শিক্ষক-শিক্ষিকারা কী ভাবে বাস পাবেন? অভিভাবকদের দিয়ে সই করানো অথবা ছবি তুলে রাখার কথা বলা হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে কতটা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছে।’’ বোলপুর থেকে যাতায়াত করা এক শিক্ষিকাও এ দিন স্বামীর সঙ্গে স্কুলে এসেছেন। কী ভাবে বাসের সুবিধা পাবেন, তা বুঝতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
যদিও তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে, নিজের মহকুমার মধ্যে যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে নিয়েই যেন কাজ করা হয়। প্রয়োজনে পরিচালন সমিতিরও সাহায্য নিতেও বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy