সমস্যা সত্ত্বেও বেকারিতে চলছে কাজ। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র
শ্রমিক সমস্যা, বিপণনে অনিশ্চয়তা-সহ নানা কারণে ‘লকডাউন’-পর্বে সমস্যায় কাঁকসার দু’টি বেকারি কারখানা। বেকারির মালিকেরা জানান, এই পরিস্থিতিতে শিল্প বাঁচিয়ে রাখাটাই কার্যত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাঁকসার প্রয়াগপুরে পুরনো বিডিও অফিসপাড়া ও ক্যানালপাড়ে দীর্ঘ দিনের পুরনো দু’টি বেকারি রয়েছে। দু’টি বেকারিতে কাজ করেন প্রায় দেড়শো জন শ্রমিক। তাঁরা মূলত বাঁকুড়া ও নদিয়ার বাসিন্দা। ওই দু’টি বেকারি থেকে প্রতিদিন পশ্চিম বর্ধমান এবং ঝাড়খণ্ড-সহ ভিন্ রাজ্যে পাউরুটি, বিস্কুট, কেক সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এখন দু’টি বেকারিকেই কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বলে দাবি।
বেকারি মালিকেরা জানান, এর মূল কারণ, বিপণনে সমস্যা। এই সমস্যা তৈরি হয়েছে, কারণ, বেকারির সামগ্রীর মূল বাজার চায়ের দোকানভিত্তিক। কিন্তু ‘লকডাউন’-এর প্রথম দিকে চায়ের দোকান খোলার অনুমতি ছিল না। ফলে, সে সময় ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়। তা ছাড়া, বেকারির সামগ্রী গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু করোনা-সংক্রমণের ভয়ে বহু গ্রামেই এখনও পর্যন্ত বিক্রেতাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, দূরে বা অন্য রাজ্যে পরিবহণগত সমস্যায় সামগ্রী সরবরাহও বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায়।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যা বাড়িয়েছে শ্রমিক না মেলা। কাঁকসার প্রয়াগপুরে পুরনো বিডিও অফিসপাড়ায় প্রায় চার দশক ধরে বেকারি চালাচ্ছেন হাজি মহম্মদ মজিবুল মিদ্দা। তিনি বলেন, “সামগ্রী তৈরি, সরবরাহের জন্য ৭৫ জন কর্মী রয়েছেন। ‘লকডাউন’-এর ফলে ,বহু শ্রমিক বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বর্তমানে মোটে ১৩ জন কর্মী রয়েছেন। উৎপাদন কমে গিয়েছে অনেকটাই।”
ওই বেকারি সূত্রে জানা যায়, লকডাউনের আগে গড়ে ১,০০০ পাউন্ড (প্রায় সাড়ে চার কুইন্টাল) পাউরুটি তৈরি করে বিক্রি করা হত। এখন তা দু’শো পাউন্ডে (প্রায় ৯০ কেজি) ঠেকেছে। দু’টি বেকারি সূত্রেই জানা যায়, সামগ্রিক ভাবে উৎপাদন কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। একই কথা জানিয়েছে ক্যানালপাড়ের বেকারিটিও। সেখানে মেরেকেটে দশ-বারো জন শ্রমিক রয়েছেন।
বেকারি মালিকদের দাবি, কারখানায় যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য বিদ্যুৎ, ডিজেলের খরচ একই আছে। বেড়েছে পরিবহণ খরচ। কমে গিয়েছে কাঁচামাল আমদানি। এই পরিস্থিতিতে ক’দিন কারখানা বাঁচিয়ে রাখা যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে বেকারি মালিকেরা।
তবে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘বেকারি শিল্পের সমস্যার কথা এখনও কেউ জানাননি। আবেদন পেলে, খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy