পথে এ ভাবেই বার্তা ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতির জেরে রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু তার মধ্যেও করোনা-সতর্কতায় রাস্তায় ‘গ্রাফিতি’ আঁকছেন উখড়ার শিল্পী অশোক সূত্রধর। ঘটনাচক্রে এর আগে দুর্গাপুরের রাস্তায় ছবি এঁকেছিলেন এক নেতা।
উখড়া স্কুলমোড়ের বাসিন্দা অশোকবাবু পেশায় মৃৎশিল্পী ও চিত্রশিল্পী। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁর দাদু ও বাবা, দু’জনেই ছিলেন মৃৎশিল্পী। বাবার কাছে ১৩ বছর বয়সে অশোকবাবুর এই শিল্পে হাতেখড়ি। অশোকবাবু জানান, পুজোর মরসুমে মূর্তি তৈরির বরাত পান। এ ছাড়া বছরভর ফেস্টুন, ব্যানার আঁকার মতো নানা কাজ করেন তিনি। সাধারণত মাসে গড়ে হাজার দশেক টাকা রোজগার হয় তাঁর। কিন্তু ‘লকডাউন’-পর্বে তা-ও বন্ধ। সঞ্চিত অর্থ দিয়েই স্ত্রী, কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার চলছে, জানান শিল্পী।
কিন্তু তার মধ্যেও এমন কাজ করছেন কেন তিনি? অশোকবাবু বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা না মেনে অনেকেই হাটে-বাজারে ভিড় করছেন। এ-ও দেখা যাচ্ছে, অনেকে অকারণে বাড়ির বাইরে ঘুরছেন। তাই ঠিক করি, রং-তুলির সাহায্যে সচেতনতা প্রচার করব।’’ এর পরেই তিনি বিভিন্ন রাস্তায় ফুটিয়ে তুলছেন করোনা-সতর্কতার নানা ধরনের ‘স্ট্রিট গ্রাফিতি’। এর মাধ্যমে বাড়িতে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা-সহ নানা বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পথ চলতে গিয়ে অনেকে সেই ছবির সামনে এসে থমকে দাঁড়াচ্ছেন অনেকেই। উখড়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান রাজু মুখোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যেই স্কুল মোড় থেকে বাজপেয়ী মোড় যাওয়ার রাস্তায় নবভারতী ক্লাবের কাছে, আনন্দ মোড় ও পুরাতন হাটতলায় রাস্তায় ছবি এঁকেছেন অশোকবাবু।
অশোকবাবু জানান, বাজপেয়ী মোড়, শঙ্করপুর মোড় ও নেতাজি সুভাষ রোডেও ‘গ্রাফিতি’র মাধ্যমে বার্তা দেওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু, সমস্যা অন্য জায়গায়। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন চলায় রং কিনতে পারছি না। রঙের জোগান পেলে ব্লকের নানা এলাকায় এমন ছবি আঁকব। তা দেখে অন্তত কিছু মানুষ সচেতন হলেও বুঝব আমার চেষ্টা সার্থক হয়েছে।’’
শিল্পীর এই কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ রায়চৌধুরী, রামচরিত পাসোয়ান, বিকাশ তিওয়ারি প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ‘‘সরকারের তরফে বারবার সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও অনেকের টনক নড়ছে না। এখন পথে নেমে এমন প্রচারের ফলে মানুষ যদি করোনা-বিপদ নিয়ে সতর্ক হন তা হলেই মঙ্গল। শিল্পীর এই কাজ প্রশংসার যোগ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy