কাটোয়া পুরসভার গেটে ‘স্যানিটাইজ়ার টানেল’ বসানো হল। নিজস্ব চিত্র
জরুরি বিভাগ ছাড়া, অন্য নানা বিভাগ দিন তিনেক বন্ধ রেখে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করা হোক, দাবি করেছিলেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এই প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এর জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। যদিও বিধায়কের পাল্টা দাবি, তাঁর প্রস্তাব বিকৃত করা হচ্ছে।
সোমবার রবীন্দ্রনাথবাবু ওই প্রস্তাব রাখলেও মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল বন্ধ নয়, প্রয়োজনে কোনও বিভাগ সাময়িক বন্ধ রেখে স্যানিটাইজ় করা হোক। যেমন প্রসূতি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু তাতে সাধারণ রোগীদের খুব অসুবিধে হচ্ছে। কারণ, শহরে এই হাসপাতালের মতো পরিকাঠামো-যুক্ত কোনও নার্সিংহোম নেই। জরুরি পরিষেবা চালু রেখেই ভাবতে হবে, কী ভাবে স্যানিটাইজ় করা যায়।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমরা দেখেছি, কিছু রোগী হাসপাতাল থেকে ফেরার পরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সবাই তো তা হননি। পুরসভার কিছু কর্মী যেমন সামনে থেকে কাজ করার ফলে, আক্রান্ত হয়েছেন। এ জন্য হাসপাতাল তো দায়ী নয়।’’ কিছু মানুষ কথার প্রকৃত অর্থ বুঝতে না পেরে অপপ্রচার করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক প্রসূতির করোনা ধরা পড়েছিল। এক চিকিৎসকও পরে করোনায় আক্রান্ত হন। এই পরিস্থিতিতে ‘স্যানিটাইজ়’ করার জন্য প্রসূতি বিভাগ বন্ধ করা হয়। শহরের কিছু বাসিন্দা নানা রোগ নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে তাঁদের মধ্যে কেউ-কেউ করোনায় আক্রান্ত হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, তা থেকেই কিছু লোকের ধারণা হয়েছে, হাসপাতাল থেকে করোনা-সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘হাসপাতাল এক দিনের জন্যও বন্ধ হলে বহু মানুষ বিপদে পড়ে যাবেন। সাপে কাটা রোগী থেকে শুরু করে দুর্ঘটনাগ্রস্ত, প্রসূতি, হৃদরোগে আক্রান্তেরা কোথায় যাবেন? হাসপাতাল বন্ধ রেখে জীবাণুমুক্ত করার দাবির বিরোধিতা করছি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অনেক পুরকর্মী ইতিমধ্যে করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। সেই যুক্তিতে তো আগে পুরসভা পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত।’’
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল সোমবার জানিয়েছিলেন, হাসপাতাল থেকে যে করোনা ছড়াচ্ছে, এমন কোনও নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ করার কোনও নির্দেশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেননি। তবে সংক্রমণ রুখতে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। এ দিন তাঁর সঙ্গে ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও। তবে মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘হাসপাতালে জরুরি রোগীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ করা হবে না।’’
এ দিনই ‘স্যানিটাইজ়ার টানেল’ বসানো হল কাটোয়া পুরসভায় ঢোকার দু’টি গেটে। পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, পুরসভায় প্রতিদিনই প্রচুর লোকন আসেন। সংক্রমণ আটকাতেই প্রায় লক্ষ টাকা খরচ করে গেটদু’টি বসানো হয়েছে। মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম থানাতেও ‘স্যানিটাইজার ট্যানেল’ বসানো হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy