Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

করোনা-কালে ভিড় কাটোয়ার ‘শ্রমিক হাটে’

কাটোয়া স্টেশন চত্বরে অপেক্ষায় শ্রমিকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

কাটোয়া স্টেশন চত্বরে অপেক্ষায় শ্রমিকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ০১:২০
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই প্রতি বছরের মতো এ বারও কাটোয়া স্টেশনের প্রান্তে বসেছে ‘শ্রমিক হাট’। সেখানে ভিন জেলার বহু শ্রমিক জড়ো হন। ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বন্ধ টিকিট কাউন্টারের অংশ পর্যন্ত জায়গায় অপেক্ষায় থাকেন দিনমজুরেরা। মজুরি নিয়ে রফা হলে জমিমালিকের সঙ্গে ধান কাটতে চলে যান তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকার ধান চাষিদের চাহিদা মেনে গত তিরিশ বছর ধরে কাটোয়া স্টেশনে এই ‘শ্রমিক হাট’ বসছে। ধান কাটার মরসুমে এই হাটের রমরমা হয়। পার্শ্ববর্তী নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম জেলার নানা গ্রাম তো বটেই, লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও অনেকে আসেন শ্রমিকের কাজ পাওয়ার আশায়। তল্পিতল্পা নিয়ে কাটোয়া স্টেশন চত্বরে তাঁরা অপেক্ষা করেন। জমি মালিকেরা স্টেশন চত্বরে এসে নির্দিষ্ট চুক্তিতে তাঁদের নিয়ে যান। কেউ ২০ দিন, কেউ ১৫ দিনের চুক্তিতে শ্রমিকদের নিয়ে গিয়ে মাঠে ধান কাটার কাজে নিয়োগ করেন।

এই হাট কী ভাবে স্টেশন চত্বরে শুরু হয়েছিল, সে বিষয়ে শহরের প্রবীণ বাসিন্দা বা জেলা প্রবীণ চাষিদের থেকে বিশেষ তথ্য মেলে না। চাষিরা জানান, এই জেলায় চাষের জমির তুলনায় কৃষি শ্রমিক অপ্রতুল। স্বাভাবিক ভাবেই অন্য জেলা ও রাজ্যের দক্ষ শ্রমিকদের নিয়ে এসে ফসল ঘরে তুলতে হয়। এ বার করোনা পরিস্থিতির জন্য কৃষি-শ্রমিকের চাহিদা বেড়েছে। ফলে, দৈনিক সাড়ে চারশো-পাঁচশো টাকা মজুরিতে চুক্তি করতে হচ্ছে বলে জানান অনেক জমিমালিক।

কেতুগ্রামের বাসিন্দা মোরশেদ শেখ, নিরঞ্জন মণ্ডলদের দাবি, শ্রমিকদের চাহিদা মতো টাকা দিয়ে মাঠ থেকে পাকা ধান তুলতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলন ও দামও তেমন বেশি মিলছে না। তাই শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে দাবি করেন তাঁরা। শ্রমিক সাইদুল শেখ, রকি শেখদের পাল্টা দাবি, ‘‘করোনার সময়ে আমরা সাত মাস কোনও কাজ করতে পারিনি। কিছু রোজগারের আশায় কাটোয়ায় এসেছি। চাহিদামতো টাকা পেলে সুবিধে হবে।’’

করোনা পরিস্থিতিতে ওই হাটে জড়ো হওয়া শ্রমিকেরা দূরত্ব-বিধি মানছেন না, অনেকে মুখো মাস্কও রাখছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের একাংশের। শ্রমিকদের দাবি, করোনা আতঙ্কে বাড়িতে বসে থাকলে না খেতে পেয়ে মরতে হবে, সে জন্যই এখানে এসে জমায়েত হতে হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজের তাগিদে শ্রমিকেরা আসছেন। তাঁরা যাতে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলেন, তা তাঁদের মধ্যে প্রচার করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Worker Market Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy