প্রতীকী ছবি।
এক সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হলেন থানার ১৮ জন আধিকারিক-কর্মী। খণ্ডঘোষ থানার ওই আক্রান্তদের মধ্যে উপসর্গ থাকায় চার জনকে কোভিড-হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের ‘হোম আইসোলেশন’-এ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই থানার ওসি মাস দেড়েক আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে গত মাসে কাজে যোগ দেন। শনিবার ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট’-এ তিনি ফের করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন জানার পরে, চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য-কর্তাদের। এক সঙ্গে এত জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত খণ্ডঘোষ থানা ভবন বন্ধ রেখে পাশের একটি অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে দৈনন্দিন কাজ চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের পরিষেবা পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, আগে খণ্ডঘোষে কাজ করেছেন, এমন কর্মী-অফিসারদের এই পরিস্থিতিতে সেখানে কাজ করতে পাঠানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খণ্ডঘোষ থানার চার জন অফিসার ও কর্মীর শুক্রবার রাতে করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। সে জন্য শনিবার ওই থানার ৫০ জন কর্মী-আধিকারিকের মধ্যে ১৮ জনের ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট’ হয়। তার মধ্যে ১৪ জনেরই রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে। আজ, রবিবার বাকি পুলিশকর্মী ও অফিসারদের করোনা পরীক্ষা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এক সঙ্গে থানার ১৮ জন পুলিশকর্মীর করোনা-আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ বলেন, ‘‘আতঙ্কের কিছু নেই, তা বোঝাতে প্রচার চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রথম করোনা-আক্রান্ত ধরা পড়ে খণ্ডঘোষেই। মাসখানেক আগে খণ্ডঘোষ থানার ভবন থেকে কিছুটা দূরে এক জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়। প্রতিটি পরিস্থিতিতেই পুলিশকর্মীদের সামনে সারিতে থাকতে হয়েছে। এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা থেকে প্রচার, বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজও পুলিশকে করতে হয়েছে। তার সঙ্গে দৈনন্দিন নানা কাজ, বহু মানুষের সঙ্গে দেখা করা, তদন্তের কাজে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হয়। পুলিশকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ওসি করোনা-আক্রান্ত হওয়ার পরে, থানা জীবাণুমুক্ত করা হয়। তাঁরা ‘মাস্ক’, ‘স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার করেছেন ঠিকই, কিন্তু থানার গাড়িগুলি সে ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়নি বলে তাঁদের একাংশের দাবি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এক সঙ্গে এত জন পুলিশকর্মী কী ভাবে আক্রান্ত হলেন, তা বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে।’’
জেলায় করোনা মোট আক্রান্ত ২১৪৫ অ্যাক্টিভ রোগী ৩৯২ ইতিমধ্যে সুস্থ ১৭১৪ মৃত ৩৯ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬৩ বর্ধমান শহর: ১০ কাটোয়া শহর: ১১ খণ্ডঘোষ ব্লক: ১৬ দাঁইহাট শহর: ১ বর্ধমান ১ ব্লক: ৫ বর্ধমান ২ ব্লক: ৪ গলসি ১ ব্লক: ৫ জামালপুর ব্লক: ১ কালনা ২ ব্লক: ১ কাটোয়া ১ ব্লক: ১ কাটোয়া ২ ব্লক: ২ মেমারি ২ ব্লক: ২ পূর্বস্থলী ১ ব্লক: ১ রায়না ১ ব্লক: ১ রায়না ২ ব্লক: ২ **শুধু গত ২৪ ঘণ্টার হিসেব (সূত্র: জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর)
খণ্ডঘোষ থানার এই খবর শুনে আতঙ্কিত জেলার অন্য নানা এলাকার পুলিশের কর্মী-আধিকারিকেরাও। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, করোনা-পরিস্থিতিতে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে পুলিশ সুপার নিজে প্রতিটি থানায় গিয়েছেন। বেশ কিছু পুলিশকর্মীর জন্য মনোবিদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। জেলার অনেক পুলিশ অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁরা সুস্থ হয়ে আবার কাজে ফিরে এসেছেন। যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু তাতে কেউ হেরে যাবেন না।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy