জামালপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুরে দেওয়ালে করোনা রুখতে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
ভোট-যুদ্ধে প্রচারের দেওয়ালকে হাতিয়ার করে নানা রাজনৈতিক দল। করোনা-যুদ্ধে এ বার সেই দেওয়ালকেই অস্ত্র করলেন জামালপুরের কিছু যুবক। এলাকার বাসিন্দাদের ‘লকডাউন’ মেনে চলা, সতর্ক থাকা, বাড়ি থেকে না বেরনোর বার্তা দেওয়া হয়েছে দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে। শুধু দেওয়াল নয়, রাস্তাতেও লেখা হয়েছে, ‘লকডাউন মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন’।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তা বেরোতে বারণ করা হয়েছে বাসিন্দাদের। তা সত্ত্বেও অনেকের মধ্যেই সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষকে সচেতন করতে জামালপুর পাড়াতল ১ পঞ্চায়েতের হিরণ্যপুর, ছোট ভুরকা ও কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের ওই যুবকদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কর্তারা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘এলাকার যুবকেরা এগিয়ে এলে অনেক কাজ সহজ হয়ে যায়। যাঁরা স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসনের পরামর্শ না মেনে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা সচেতন হবেন। আমাদের কর্মীরাও দায়িত্ব পালনে আরও উৎসাহ পাবেন।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক দিন ধরে এক দল যুবক নিজেরা আলোচনা করে পাশাপাশি ওই তিনটি গ্রামে দেওয়াল লিখেছেন। তিন গ্রামের রাস্তার মোড়ে বাজার এলাকাতেও দেওয়াল লেখা হয়েছে। রাস্তাতেও সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। একটি দেওয়ালে লেখা রয়েছে, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমান—বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। বারবার চোখে হাত দেবেন না। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোবেন। জ্বর, সর্দি, কাশি হলে হাতুড়ে নয়, নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারের পরামর্শ নিন।’ আবার কোথাও আশাকর্মীদের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও ‘আতঙ্ক নয়, সতর্ক থাকুন। লকডাউন মেনে চলুন’ পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। কোথাও লেখা হয়েছে, ‘আড্ডা, রাস্তায় ঘোরার মতো বাহাদুরি দেখানো বন্ধ করুন। বাড়িতে থাকুন’।
হঠাৎ এ ভাবে দেওয়াল লেখার সিদ্ধান্ত কেন? কালীচরণ সোরেন, শেখ ইজাজ আহমেদরা বলেন, “করোনার ফলে গোটা বিশ্ব কাঁপছে। সব দেশই জানাচ্ছে, এর হাত থেকে বাঁচার উপায় পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা। এ নিয়ে সরকার প্রচার করলেও কিছু লোক আড্ডা দেওয়া, বাইরে বেরনো কমাচ্ছেন না। তাঁদের বোঝাতে ও এলাকাবাসীকে করোনা নিয়ে সতর্ক করতেই দেওয়াল লিখছি আমরা।’’ এলাকার বাসিন্দা অপর্ণা মালিক, জ্যোৎস্না নায়েকদের কথায়, ‘‘ভোটের সময়ে দেওয়াল লিখন হয়। হঠাৎ দু’চারজন যুবক করোনা নিয়ে দেওয়াল লেখায় গ্রামবাসীর মধ্যে কৌতুহল বেড়েছে। দিনদুপুরে আড্ডাও কমছে।’’ জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, ‘‘লকডাউনে সবাইকে শামিল করার জন্য ওই যুবকেরা নজির তৈরি করলেন। এই উদ্যোগ অভিনবও বটে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy