করোনার প্রকোপ বাড়ছে বর্ধমানে। প্রতীকী চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ ) শেখ মহম্মদ ইউনুস জানান, গত ৯ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সংক্রমণের হার ছিল (অর্থাৎ প্রতি একশো জনের পরীক্ষায় যত জন পজ়িটিভ) ৩.১৮ শতাংশ। এই শতাংশ তার আগের সপ্তাহের তুলনায় ১.৬৫ শতাংশ বেশি। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান থেকেই জানা যাচ্ছে, করোনা ইতিমধ্যেই রাজ্য ও দেশে চোখ রাঙাচ্ছে। শনিবার, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনেই রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫৫১ জন। শনিবার পর্যন্ত টানা চার দিনে দেশে কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা দশ হাজারের উপরে ছিল। পাশাপাশি, কোভিডে সম্প্রতি কলকাতায় এক বৃদ্ধেরমৃত্যু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ২২০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে সাত জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ২ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১৯৬ জনের পরীক্ষায় পজ়িটিভ রিপোর্টে এসেছিল তিন জনের। ঘটনা হল, এপ্রিলের ১ তারিখ পর্যন্ত মাসিক হিসাবে সংক্রণের হার এক শতাংশেরও নীচে ছিল।
এই পরিসংখ্যানকে সামনে রেখেই ইউনুস বলছেন, “সংক্রমণের হার বাড়ছে, এটা স্পষ্ট। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিন জন চিকিৎসাধীন। করোনার হার শূন্যে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে নাগরিক সচেতনতাই প্রধান বিকল্প। পাশাপাশি, আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০টি, শিশুদের জন্য ১০টি শয্যা তৈরি রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে তা দ্বিগুণ করা হবে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ৮০টি শয্যা করোনা চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে। এ ছাড়াও, সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যার ব্যবস্থা করা হবে। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসার জন্য তাঁরা সব রকম ভাবে তৈরি। এক সপ্তাহ আগে যাবতীয় যন্ত্রাংশও পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ দিকে, ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের’ আসানসোল শাখার সভাপতি মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “করোনা নির্মূল হয়নি। নতুন-নতুন ‘স্ট্রেন’ ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন জায়গাতেই সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, মাস্ক পরার মতো বিষয়গুলি খেয়াল রাখত হবে। এ নিয়ে প্রশাসনকে কড়া ভূমিকা নিতে হবে।” রাজ্যের কোভিড মনিটরিং কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসুর মতে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু জায়গায় করোনা সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে, এটা ভেবে আমাদের এলাকায় হবে না, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। তিনি নাগরিক সতর্কতার উপরেই জোর দিচ্ছেন।
পাশাপাশি, সমরেন্দ্রের দাবি, “কোভিড মনিটরিং কমিটির সঙ্গে প্রায় এক বছর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠকই হয়নি। বৈঠক হওয়াটা জরুরি। এতে উপকার হবে।” ইউনুস জানান, কোভিড মনিটরিং কমিটির প্রতিনিধিরা মূলত বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতেন। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হত। জেলায় করোনা সংক্রমণ শূন্যে নেমে যাওয়ায় বৈঠক হয়নি। তবে এ বার তা নিয়মিত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy