Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকারি জমিতে বাড়ি নিয়ে বিতর্ক

দীপুরানি মেটে, কানু মেটে, লক্ষ্মণ মেটে, রবি মেটে, রাজু মেটে, সুপর্ণা মেটে-সহ মোট এগারোজন উপভোক্তা জানান, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের বেছে নেওয়া হয়।

খোঁড়া হয়ে গিয়েছে ভিত। নিজস্ব চিত্র

খোঁড়া হয়ে গিয়েছে ভিত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য জমির পরচা, দলিল-সহ আবেদন জানিয়েছিলেন উপভোক্তারা। তাঁদের জমিতে ‘জিও-ট্যাগিং’ও করেছে পঞ্চায়েত। প্রথম দফার টাকা বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু বন দফতর জানিয়েছে, যেখানে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে, তা তাদের জমি, কারও ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়। ফলে, বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাড়ি তৈরির কাজ। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি, সমস্যায় পড়েছেন ওই উপভোক্তারা। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২-এর রামনগর পঞ্চায়েতের ডাঙাপাড়ার ঘটনা।

দীপুরানি মেটে, কানু মেটে, লক্ষ্মণ মেটে, রবি মেটে, রাজু মেটে, সুপর্ণা মেটে-সহ মোট এগারোজন উপভোক্তা জানান, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের বেছে নেওয়া হয়। ‘জিও-ট্যাগিং’-এর পরে প্রত্যেক উপভোক্তা প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পান। দীপুরানিদেবী, রবিবাবুরা জানান, টাকা পেয়ে বাড়ি তৈরির জন্য নির্মাণ সামগ্রী কেনা, ভিত খোঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছিল।

আচমকা গত ৬ ডিসেম্বর পঞ্চায়েত উপভোক্তাদের নোটিস পাঠিয়ে জানায়, বাড়ি নিজের জমিতে তৈরি না হলে, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া যাবে না। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে। দীপুরানিদেবীদের অভিযোগ, ‘‘যেখানে বাড়ি তৈরি হচ্ছে, সেখানকার ছবি তুলেছিল পঞ্চায়েত। এখন টাকা ফেরত দিতে বললে বা টাকা না মিললে আতান্তরে পড়ব। মিস্ত্রিদের খরচও দেওয়া যাবে না।’’

কিন্তু কেন এমন নোটিস? রামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুমার আকুড়ের দাবি, ‘‘যে জায়গায় বাড়িগুলি তৈরি করা হচ্ছিল, তা বন দফতরের জায়গা। বন দফতর বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানানোয় নোটিস দিতে হয়েছে। উপভোক্তাদের নিজের জায়গা হলে বাড়ি তৈরিতে কোনও আপত্তি নেই সে কথাও জানানো হয়েছে।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ওই উপভোক্তারা যে সব জমির দলিল, পরচা দিয়েছিলেন তা লাগোয়া অন্য একটি গ্রামের। অথচ, বাড়ি তৈরি হচ্ছে অন্যত্র। কিন্তু উপভোক্তাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, যখন পঞ্চায়েত থেকে ‘জিও-ট্যাগিং’ করা হয়, তা কোন জমি মিলিয়ে দেখা হয়নি কেন। প্রকল্প মঞ্জুরই বা হল কী ভাবে, উঠেছে সে প্রশ্নও। পাশাপাশি, বুলি মেটে, রাজু মেটের মতো কয়েকজন উপভোক্তার আরও অভিযোগ, অতীতেও জমি সংক্রান্ত একই সমস্যা থাকলেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি হয়েছে। তখনও পঞ্চায়েত নোটিস দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘এর আগে ওই এলাকায় সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হয়েছে। তখন কেউ আপত্তি জানাননি। বিষয়টি পঞ্চায়েতের জানাও ছিল না।’’

বন দফতর সূত্রে জানা যায়, জঙ্গলের মধ্যে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক স্তরে আপত্তি জানানো হয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও (আউশগ্রাম ২) গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়।

পাশাপাশি, উপভোক্তারা তাঁদের দলের সমর্থক হওয়ায় হয়রান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা নিতাই বিশ্বাস। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা আসগর শেখ।

অন্য বিষয়গুলি:

Government Land Land acquisition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy