এই যোগদান (তৃণমূলের পতাকার বাঁ পাশে) নিয়েই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
গত আসানসোল পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে ভোটে লড়েছিলেন সাজ্জাদ সাম্মি নামে এক জন। বুধবার তিনি রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এই যোগদান নিয়ম মেনে হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি মহম্মদ হাসরাতউল্লাহ, দলের ব্লক সভাপতি অনুপ মাজি। একই কথা বলেছেন দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও। এই ঘটনায় বিতর্কের মুখে অবশ্য তাপস অভিযোগে আমল দেননি।
আসানসোল পুরসভার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতনগরে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন হয়। সেখানে তাপসের উপস্থিতিতে সাজ্জাদ তৃণমূলে যোগ দেন। তা নিয়ে ওয়ার্ডের বর্তমান পুরপ্রতিনিধি মহম্মদ হাসরাতউল্লাহ বৃহস্পতিবার বলেন, “ভোটের প্রচারে নির্দল প্রার্থী তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা করেছিলেন। অথচ, পুরভোটের সাত মাসের মধ্যে তাঁকেই বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে নেওয়া হল। আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। দলের অন্য নেতৃত্বও অন্ধকারে।” এ দিকে, যোগদান-পর্বের পরেই, দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ সমাজমাধ্যমেও সরব হন।
দলের ওই কর্মসূচির বিষয়ে ব্লক কমিটির কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের আসানসোল দক্ষিণ ব্লক কমিটির সভাপতি অনুপ মাজি। তিনি বলেন, “এই ঘটনাটি কার্যত দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই প্রকাশ্যে এনে দিল।” তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে দলকে বিপদে ফেলছেন, তাঁদের দলে নেওয়ার আগে জেলা ও রাজ্য কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। নরেন্দ্রনাথও জানিয়েছেন, কাউকে দলে নিতে হলে, প্রথমে ব্লক নেতৃত্বকে জানাতেই হবে। ব্লক নেতৃত্বের মাধ্যমে সে সংক্রান্ত প্রস্তাব জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। পরে তাতে রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদন দিলে সংশ্লিষ্ট জনকে দলে নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে তার কিছু মানা হয়নি বলে দাবি নরেন্দ্রনাথের।
যদিও, পঞ্চায়েত ও পুরভোটের পরে, নির্দল ও অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগদানের ঘটনা ঘটেছে। যেমন, কংগ্রেসের টিকিটে পুরভোটে জেতা মহম্মদ জাকির হোসেন, নির্দল টুম্পা চৌধুরীদের তৃণমূলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জামুড়িয়ার ডোবরানায় শর্মি ওরাং, পরাশিয়ার সোহন হাঁসদা, অন্ডালের উখড়ায় সুলতা দাস ও শেখ সামিমেরা ‘গোঁজ’ প্রার্থী ছিলেন। তাঁরা জিতেছিলেন পঞ্চায়েত ভোটে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, চার জনকেই দলে নেওয়া হয়নি। কিন্তু শর্মিকে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীদের সঙ্গেই ভোট প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। আবার সুলতা ও সামিমকে নিয়মিত দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায় বলেও দাবি।
সাজ্জাদের যোগদান প্রসঙ্গে নরেন্দ্রনাথ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। ওই কর্মসূচিতে তাপসদা ছিলেন। উনি দলের প্রবীণ নেতা। কিন্তু দলের অনুমোদন না নিয়ে কেন এমন করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছি।”
যদিও, তাপসের বক্তব্য, “এটা দলের বিষয়। দলীয় নেতৃত্বেরা সেখানে ছিলেন। ওঁদের সঙ্গে আমিও ছিলাম।” যদিও, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, যোগদান পর্বে তাপস ছাড়া অন্য কোনও নেতা ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সাজ্জাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy