উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের লাইনের নীচে নিয়ম ভেঙে নির্মাণকাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
মাথার উপর দিয়ে বিদ্যুতের উচ্চ পরিবাহী তারের লাইন গিয়েছে। নীচে সার দিয়ে বাড়ি। অভিযোগ মাঝেমাঝেই বিপদ ঘটে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায় না দুর্গাপুরে।
শহরে বিদ্যুতের লাইন থেকে তড়িদাহত হওয়া বা আগুন লাগার ঘটনা ঘটে মাঝে-মধ্যেই। ২০১৭ সালের ২১ জুন সন্ধ্যায় বেনাচিতির গুরুদ্বার এলাকায় টিউশনে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির পডুয়া দেবজ্যোতি ঘোষের। কোচিং সেন্টারের তিনতলা বাড়ির বারান্দার মাত্র ফুট দুয়েক দূর দিয়ে যাওয়া উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের লাইনের সঙ্গে কোনও ভাবে তার শরীরের সংযোগ হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে যায় বলে পুলিশ জানায়। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর শহর লাগোয়া আড়রায় বাড়ির ছাদে উঠে দীপাবলির আলো লাগাতে গিয়ে উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের তারে তড়িদাহত হয়ে গুরুতর জখম হন এক প্রৌঢ়। বাড়িটি আগে এক তলা ছিল। তাই বিপদের সম্ভাবনা কম ছিল। কিন্তু দোতলা করার পরে তা বিদ্যুতের লাইনের আরও কাছে এসে পড়েছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, উচ্চ পরিবাহী লাইনের নিচে কোনও নির্মাণকাজ করা যায় না।
গত ২৩ মে গভীর রাতে ফরিদপুরে ভস্মীভূত হয় গুদাম-সহ চিকিৎসা সামগ্রী তৈরির একটি কারখানা। কারখানার উপর দিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের তার। কোনও ভাবে শর্ট সার্কিট হওয়ায় সেই তার থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে পুলিশ ও দমকলের অনুমান। তার ছিঁড়ে পড়ে নীচে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কারখানার মালিকের দাবি, তারের লাইন সরানোর আর্জি আগেই জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দফতরে। তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ২৯ নভেম্বর এমএএমসি এলাকার সুকান্তপল্লিতে বাড়ির দোতলায় নির্মাণকাজ করার সময়ে মাথার উপরের বিদ্যুতের তারে তড়িদাহত হয়ে জখম হন দুই নির্মাণকর্মী। পুড়ে যায় বাড়ির নানা বৈদ্যুতিন সামগ্রী। তড়িদাহতদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যুতের লাইনের নীচে গড়ে উঠেছে এমন কয়েকশো ঘর-বাড়ি। এ ভাবে বিদ্যুতের লাইনের নীচে কী ভাবে নির্মাণকাজ হয়েছে? পুরসভার দাবি, অনুমোদন ছাড়াই এ সব নির্মাণ হয়ে থাকে। প্রথমে জমির জন্য হোল্ডিং ট্যাক্সের আবেদন জানান মালিক। হোল্ডিং ট্যাক্স চালু হয়ে গেলে নিজের মতো করে নির্মাণ শুরু করে দেন। তখন আর পুরসভার অনুমোদন নেন না। কারণ, বিদ্যুতের লাইনের নীচে নির্মাণ পুরসভা অনুমোদন করে না।
শহরের মেয়র দিলীপ অগস্তি জানান, হাজার-হাজার বেআইনি নির্মাণ নিয়মিত খতিয়ে দেখার মতো পরিকাঠামো পুরসভার নেই। তিনি বলেন, ‘‘একটি কমিটি বিষয়টি দেখছে। নির্দিষ্ট উচ্চতার বেশি সব নির্মাণ পুরসভা ভেঙে দেবে।’’ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক আধিকারিক জানান, নির্মাণ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব ও উচ্চতা মেনে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়। পরে নিয়ম না মেনে উচ্চতা বাড়ানো বা সম্প্রসারণের কাজ হওয়ায় বিপদ বাড়ে। তাই মাটির নীচ দিয়ে বা ‘ইনসুলেটেড’ কেব্ল বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বহু জায়গায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy