Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Conflict

‘ডি ও’ নিয়ে বারবার তেতে উঠছে জেলা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেকের মধ্যে পাণ্ডবেশ্বরের সাউথ শ্যামলা সাইডিং, অণ্ডালের শঙ্করপুর খোলামুখ খনি থেকে ‘ডি ও’ নিয়ে বারবার শাসক দলের একাংশের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে।

বুধবার রাতে এখানেই খুনের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার রাতে এখানেই খুনের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৩
Share: Save:

কয়লার ‘ডি ও’ অর্থাৎ ‘ডেলিভারি অর্ডার’ নিয়ে ব্যবসা করাটা বৈধ। কিন্তু এই বরাতকে কেন্দ্র করেই সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকবার জেলার নানা প্রান্ত তেতে উঠেছে। এতে সাম্প্রতিকতম সংযোজন, বুধবার, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জনের মৃত্যু।

ইসিএলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা ‘ডি ও’ বিষয়টি কী, তা জানান। তিনি জানান, ইসিএল অথবা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা সরাসরি ‘স্পট ই-অকশন’-এর মাধ্যমে কয়লা কেনার অনুমতি দেয় কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে। বরাত পেয়ে কয়লা কেনার পরে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃপক্ষ অথবা ব্যক্তি ঠিক করেন, সেই কয়লা কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, কোথায় বিক্রি করা হবে। কয়লা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠাতে বরাত পাওয়া ব্যক্তি অথবা সংস্থা কর্তৃপক্ষ কমিশনের বিনিময়ে স্থানীয়দের বরাত দেন। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এই কয়লা পাঠানোকে কেন্দ্র করেই বারবার বিবাদ দেখা যাচ্ছে। ইসিএল জানিয়েছে, ডি ও-র মাধ্যমে বিভিন্ন খনি থেকে দৈনিক এক থেকে দশ হাজার টন কয়লা বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেকের মধ্যে পাণ্ডবেশ্বরের সাউথ শ্যামলা সাইডিং, অণ্ডালের শঙ্করপুর খোলামুখ খনি থেকে ‘ডি ও’ নিয়ে বারবার শাসক দলের একাংশের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, অণ্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বরে দলের দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। তারও আগে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গোগলা এলাকাতেও প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদ, জানান দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদেরই একাংশ।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, বুধবার খাস কাজোড়ায় যেখানে গুলি চলার অভিযোগ সামনে এসেছে, সেখানে এই ‘ডি ও’ পাওয়া এবং কয়লা পরিবহণের কর্মী নিয়োগ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য বিষ্ণুদেব নুনিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমান তৃণমূল যুব সভাপতি রূপেশ যাদবের অনুগামীদের বিবাদ রয়েছে। খুনে অন্যতম অভিযুক্ত বিদ্যুৎ নুনিয়া অতীতে বিষ্ণুদেববাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে বিদ্যুৎ এবং বিষ্ণুদেববাবুর ভাই মনোজবাবুর মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে অশান্তি বাধে। মারামারিও হয় দু’পক্ষে। এর পরে, নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি চলে যায় মনোজবাবুদের হাতে। তাঁরই সঙ্গী ছিলেন গুলিতে নিহত ধরমবীর নুনিয়া। এ দিকে, বিদ্যুৎ যোগ দেন রূপেশবাবুর গোষ্ঠীতে। তার পরেই দু’গোষ্ঠীর অশান্তি বাধে বারবার।

বিষ্ণুদেববাবু, রূপেশবাবু, দু’জনেই বুধবারের ঘটনায় নিহত এবং অভিযুক্তদের দলের কর্মী বলে জানিয়েছেন। তবে বিষ্ণুদেববাবুর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার খুনে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে অণ্ডাল থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করুক।’’ রূপেশবাবুর দাবি, ‘‘কী ঘটনা, তা ঠিক জানি না। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’

তবে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘কয়লাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের কোন্দলের জেরে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।’’ কোন্দলের অভিযোগ অস্বীকার করেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Conflict Raniganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy