এই এলাকার সংস্কার নিয়েই দ্বন্দ্ব। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অন্তত পাঁচটি সংস্থা, দফতর, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বার্নপুরের আট নম্বর বস্তি লাগোয়া রাধানগর রোডের ইস্কো লেভেল ক্রসিং অঞ্চলটি মেরামত করা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় নিত্য দিন ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা।
আসানসোল স্টেডিয়ামের উল্টো দিকে বার্নপুর রোড হয়ে, পশ্চিম দিকে নিউটাউন পর্যন্ত গিয়েছে রাধানগর রোড। এই রাস্তার উপরেই রয়েছে লেভেল ক্রসিংটি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ক্রসিংয়ের রাস্তা বহু বছর সংস্কারহীন। বড়-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল কাড়ার বলেন, ‘‘প্রতিদিন এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। জখম হন পথচারীরা।’’
ইস্কোর কর্মী প্রতাপ সেনের ক্ষোভ, ‘‘প্রতিদিন কার্যত জীবন হাতে করে মোটরবাইক চালিয়ে কাজে যেতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বহু বার এই এলাকাটি মেরামতের দাবি জানিয়েছি। লাভ হয়নি।’’ মিনিবাস চালক নিতাই পাল বলেন, ‘‘এই সামান্য এলাকা পেরোতে বুক কাঁপে।’’
কিন্তু সংস্কার হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নেই শুরু চাপান-উতোর। পাঁচ পক্ষ— রেল, ইস্কো, পূর্ত দফতর, আসানসোল পুরসভা এবং আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)।
পূর্ব রেলের আসানসোল রেল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই লেভেল ক্রসিংয়ের দেখভাল রেল করে না। ইস্কো করে। জায়গাটিও রেলের নয়। তাই এ বিষয়ে রেল কিছু করতে পারবে না।’’ ইস্কোর জনসংযোগ দফতর সূত্রে আবার দাবি করা হয়েছে, ক্রসিংয়ের দেখভাল ইস্কো করলেও রাস্তাটি রাজ্যের পূর্ত দফতরের। তাই তা মেরামত করা উচিত পূর্ত দফতরের। পূর্ত দফতরের আসানসোল শাখার আধিকারিকেদের আবার দাবি, আসানসোল মহকুমায় জিটি রোড ছাড়া, বাকি সব রাস্তা আসানসোল পুরসভার অধীন। পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, ‘‘এই রাস্তাটি প্রথম থেকেই এডিডিএ দেখভাল করছে!’’
এডিডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বিষয়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। বিস্তারিত খোঁজখবর করে পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে এডিডিএ-র এক আধিকারিকের মতে, এই রেললাইন দিয়ে শুধু ইস্কোর পণ্য আনা-নেওয়া হয়। ফলে, লাইন ব্যবহার করে সুবিধা পায় ইস্কো। আবার লাইনটি ব্যবহার করতে দিয়ে রোজগার হয় রেলের। তাই রেল ও ইস্কো-র এলাকাবাসীর স্বার্থে এলাকাটি মেরামত করা উচিত। উজ্জ্বলবাবু জানান, তাঁরা এ নিয়ে রেল ও ইস্কোর সঙ্গে কথা বলবেন। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি রেল ও ইস্কোর কর্তারা।
এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দারা জানান, ক্রসিং পার করে যাতায়াত করেন নিউটাউন ইস্কো আবাসন, সাঁতাগ্রাম, মিঠানি, ছোট ধেমো-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা। চলে যাত্রিবাহী বাস, পুলকার-সহ নানা ধরনের যানবাহন। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, হাঁটু সমান গর্ত। বৃষ্টির জল ভরে থাকায় গর্তগুলি বোঝা যাচ্ছে না। স্কুটার, মোটরবাইক চালকেরা অনেকেই গর্ত বুঝতে না পেরে বেসামাল হচ্ছেন। পথচারীরাও অতিকষ্টে যাতায়াত করছেন। তাই, এলাকাবাসী এখন তাকিয়ে চাপান-উতোর পেরিয়ে সংস্কারের কাজে কবে হাত পড়ে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy