প্রতীকী ছবি।
ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে গিয়ে ‘বেপাত্তা’ হয়ে যাওয়া দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) বাস দু’টির খোঁজ মিলেছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোদালা কিরণকুমার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বাস দু’টি দুর্গাপুরে ফেরে। দু’টি বাসের চালক মোল্লা ওয়াহিদ হক ও গোপাল মাজি সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ভিন্ রাজ্যে তাঁদের মারধর ও হেনস্থা করা হয়েছে।
চালক গোপালবাবুর অভিযোগ, বিহারে কোনও সহযোগিতা মেলেনি। জোর করে উত্তরপ্রদেশ যেতে বাধ্য করা হয়। টাকা-পয়সা ছিল না। কিন্তু তেল কিনে দেওয়ার আর্জি জানালে সেখানকার প্রশাসন বলে, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বলতে।’ এর পরে তাঁরা বাড়িতে ফোন করে টাকার ব্যবস্থা করেন বলে দাবি। গোপালবাবুর অভিযোগ, ‘‘ঘিরে থাকা উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকেরা মারধর করেন। বলে, বাড়ি পৌঁছে না দিলে মেরে গুম করে দেবে। মোবাইলও কেড়ে নেয়।’’ চালক মোল্লা ওয়াহিদ হকেরও অভিযোগ, ‘‘বিহার সরকারের আধিকারিকের উস্কানিতেই মারধর করা হয়। খাবার দেওয়া হয়নি। দোকানে জলের বোতল কিনতে গেলেও বাধা দেওয়া হয়।’’
এসবিএসটিসি জানায়, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফেরাতে গত ৯ মে প্রশাসনের চাহিদা মতো আটটি বাস দেওয়া হয়। ছ’টি বাস বিহারে শ্রমিকদের নামিয়ে ফেরত এলেও আসেনি অন্য দু’টি বাস। সোমবার এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তমোনাশ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘বিহারের জামুইয়ে উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের নামিয়ে ফেরার কথা থাকলেও বাস দু’টিকে জোর করে উত্তরপ্রদেশে পাঠানো হয়।’’ আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (দুর্গাপুর) মৃণাল দত্তেরও অভিযোগ, ‘‘সহযোগিতা করেনি জামুইয়ের পুলিশ, প্রশাসন।’’ এ অবস্থায় সোমবার প্রশাসনের তরফে একটি গাড়িতে করে এসবিএসটিসি-র তিন জনকে পাঠানো হলে, রাত ১টা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের কাছে বাস দু’টির খোঁজ মেলে। এসবিএসটিসি-র ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর মধুসূদন দত্ত বলেন, ‘‘এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের লাগাতার চেষ্টায় চালক-সহ বাস দু’টি শহরে ফেরে।’’ মঙ্গলবার দুই চালককে সংবর্ধনা দেন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে। তিনি বলেন, ‘‘দুই চালককে বিহারে হেনস্থা ও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।’’
এ দিকে, এসবিএসটিসি-র সিটু প্রভাবিত সংগঠনের রাজ্য কার্যকরী সভাপতি পঙ্কজ রায়সরকারের দাবি, ‘‘চালকদের পূর্ণ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্যের বাইরে যেতে হলে দু’জন চালক দিয়ে বাস পাঠাতে হবে। সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিক, পুলিশ থাকতে হবে। প্রত্যেক বাসের ‘ই-পাস’ দিয়ে কত দূর পর্যন্ত যাবে তা-ও নির্দিষ্ট করে লিখে দিতে হবে।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা নিন্দনীয়। চালকদের সুরক্ষা দিতে হবে।’’
বিষয়টি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পরিবহণ সচিবের নজরে আনা হয়েছে বলে জানান এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তমোনাশবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy