Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Jamalpur

‘কাটমানি’র নালিশ তৃণমূল নেতাদের কাছে

গ্রামের কয়েকজন নেতা ‘জালিয়াতি’ করে বেড়াচ্ছেন অভিযোগ করে তাঁদের দাবি, ওই নেতাদের দলের সামনের সারিতে রাখলে গ্রামে তৃণমূল ভোট পাবে না। 

তৃণমূল নেতাকে পেয়ে নালিশ জামালপুরের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল নেতাকে পেয়ে নালিশ জামালপুরের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামালপুর শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:২৫
Share: Save:

এর আগে ‘বাংলা আবাস যোজনা’র ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে শাসক দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। শৌচাগার তৈরি, বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ করিয়ে দেওয়ার নামেও তৃণমূলের বুথ স্তরের কিছু নেতা ‘কাটমানি’ নিয়েছেন, এ বার এমন অভিযোগ শুনলেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা। গ্রামে যাঁরা তৃণমূলের ‘নেতা’ হিসেবে রয়েছেন, তাঁরা ‘জালিয়াত’— শুনতে হল এমন অভিযোগও। গ্রামে গিয়ে এমন অভিযোগ শুনে ‘অস্বস্তি’তে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ নিয়ে কটাক্ষ করছে বিজেপি।

সোমবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের জারগ্রাম পঞ্চায়েতের মোহনপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় যান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিকেরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের স্কুল লাগোয়া পাড়ায় গেলে বাসিন্দারা তাঁদের ঘিরে ধরে উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন ভাতা পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ জানাতে থাকেন। আবেদনপত্র পূরণ করে পঞ্চায়েত সদস্যের হাতে দেওয়ার কথা বললে সভাপতিকে এক প্রবীণ মহিলা অভিযোগ করেন, ‘‘ওঁদের আমরা বিশ্বাস করি না। এর আগে অনেক বার ফর্ম নিয়ে গিয়েছেন। ওঁদের ফর্ম দিলে জমা পড়বে কি?’’ এর পরে কয়েকটি বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই বাড়ি থেকে শৌচাগার তৈরি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি গ্রামে নেই বললেই চলে। এক জনের বাড়ি পাওয়ার কথা ছিল। তিনি ভিত খুঁড়তেই তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সে বাড়ি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি, দাবি ওই বাসিন্দাদের। আরও কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘শৌচাগার তৈরির জন্য তৃণমূলের নেতারা টাকা নিয়েছিলেন। সে টাকা পঞ্চায়েতে জমা পড়েনি। শৌচাগারও তৈরি হয়নি।’’

সব শুনে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, “কেউ যদি টাকা নিয়ে নেয়, ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক। বিষয়টি জানা ছিল না। কত জনের সঙ্গে এ রকম হয়েছে, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এর পরেই স্বপন মালিক, সন্তু মালিক-সহ কয়েকজন বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘একশো দিনের কাজের টাকা দেয়নি। বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ‘কাটমানি’ নিয়েছে। এমনকি, বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ করে দেওয়ার জন্যও টাকা নিয়েছে তৃণমূলের নেতারা।’’ গ্রামের কয়েকজন নেতা ‘জালিয়াতি’ করে বেড়াচ্ছেন অভিযোগ করে তাঁদের দাবি, ওই নেতাদের দলের সামনের সারিতে রাখলে গ্রামে তৃণমূল ভোট পাবে না।

সে দিন কর্মসূচি শেষে একটি সভা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেখানেও বাড়ি তৈরি নিয়ে ক্ষোভ জানান কিছু বাসিন্দা। ক্ষুব্ধ সভাপতিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সব কাজের ফিরিস্তি যদি আমাকে দিতে হয়, তা হলে পঞ্চায়েতের সদস্য থাকার দরকার নেই!’’ পরে অবশ্য ‘কাটমানি’র প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওই গ্রামে প্রকৃতই সমস্যা রয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, সমস্যাগুলি ভাল ভাবে চিহ্নিত করে কাজ করা হবে।’’ ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুভাষ কোলের যদিও দাবি, ‘‘কাটমানির কোনও বিষয় নেই। সবটাই বিজেপির চক্রান্ত।’’

বিজেপির জামালপুর বিধানসভা এলাকার আহ্বায়ক জিতেন ডোকালের কটাক্ষ, ‘‘শৌচাগার তৈরির টাকাও খেয়েছে তৃণমূলের লোক। সে অভিযোগ শুনতে হচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে। ওঁদের লজ্জা করছে না?’’ জামালপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সীমন্ত রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কী হয়েছে না জেনে, কোনও মন্তব্য করব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jamalpur TMC Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy