Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Water Project Postponed

বন্ধ জলপ্রকল্পের কাজ, ভোগান্তি

বাহাবপুরে প্রকল্পের জন্যে ২০২১ সালে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রুপালি চট্টোপাধ্যায়ের শাশুড়ি রেণুকা ও তাঁর তিন ছেলে দু’কাঠা জমি দান করবেন বলে জানান।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিদস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৭
Share: Save:

পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল মেমারি শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাহাবপুরগ্রামে। তবে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও দলের স্থানীয় নেতারা গিয়ে সেই কাজ বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। এর পর প্রায় দু’মাস কেটে গেল। বন্ধ পড়ে জলপ্রকল্পের কাজ। চলতি গরমেও জল কষ্ট দূর হবে কি না, প্রশ্ন এলাকার বাসিন্দাদের।

গোপগন্তার ১ পঞ্চায়েতের এই গ্রামে তিন বছর আগে অন্তত ৩৫০টি বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ হয়েছে। কিন্তু ‘ঘোষ প্রকল্প’ থেকে আসা পানীয় জল কারও বাড়িতে টিপটিপ করে পড়ে তো কারও বাড়িতে পৌঁছয়নি। সে কারণে ওই প্রকল্পে তৃতীয় পাম্পটি বসানোর দায়িত্ব নেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (পিএইচই)। এখান থেকে বাহাবপুর ছাড়াও আন্দুরগ্রামে পানীয় জল সরবরাহ করার কথা।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা যায়, বাহাবপুরে প্রকল্পের জন্যে ২০২১ সালে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রুপালি চট্টোপাধ্যায়ের শাশুড়ি রেণুকা ও তাঁর তিন ছেলে দু’কাঠা জমি দান করবেন বলে জানান। দু’বছর পরে পাম্প বসানোর অনুমোদন মিললে তাঁরা সেই জমি সরকারকে রেজিস্ট্রি করে দেন। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পাম্প বাসনোর অনুমতি এলে গত ২৮ ডিসেম্বর কাজ শুরু হয়। পরের দিন সকালেই স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান অর্চনা ক্ষেত্রপাল, উপপ্রধান মধুসূদন মল্লিক ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়রা ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।

পঞ্চায়েতের দাবি, ওই জায়গায় পাম্প বসাতে গেলে গাড়ি যাওয়ার রাস্তা থাকছে না। অন্য এক জনের জমি উপর দিয়ে সংশ্লিষ্ট জমিতে যেতে হচ্ছিল। তা নিয়ে জমির মালিক পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষিতেই দফতরকে আপাতত কাজ বন্ধ রেখে জমির সমস্যা মেটানোর জন্যে বলা হয়েছিল। তার পরেও কাজ শুরু হওয়ায় পঞ্চায়েতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

বিধায়ক (মেমারি) মধুসূদন ভট্টাচার্য জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। বিধায়কের কথায়, “দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে বিষয়টি এড়িয়ে গেলে হবে না। যাঁরা কাজ আটকে দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করা দরকার।”

উপপ্রধান মধুসূদন মল্লিক বলেন, “পঞ্চায়েতের বৈঠকে ওই জায়গার বদলে অন্য জায়গায় প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে। আমরা চাই অতি দ্রুত পাম্প বসিয়ে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করুক তারা।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (মেমারি ১) নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামবাসীর আপত্তিতে আইন মেনেই পঞ্চায়েত এগিয়েছে। বিকল্প জমিরও ব্যবস্থা হয়েছে। কাজ হওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।”

স্থানীয়দের একাংশে মতে, গত দু’বারের পঞ্চায়েত সদস্য রুপালি নানা প্রলোভনেও বিধায়কের শিবির ছাড়েননি। সে কারণেই ব্লক সভাপতি নিত্যানন্দের অনুগামীরা প্রকল্পের কাজ আটকে দিয়েছেন। জলপ্রকল্প কার কৃতিত্বে হচ্ছে— এটাই এখন দু’পক্ষের ‘সম্মানের লড়াই’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy