তৈরি হচ্ছে রথের প্যান্ডেল। সেখানেই চলল নমাজ। সোমবার দুর্গাপুরে। ছবি: বিকাশ মশান
যে মাঠে ফি বছর জগন্নাথের মাসির বাড়ির মণ্ডপ তৈরি হয়, সেই মাঠেই সোমবার পড়া হল বকরি ইদের নমাজ। এ দিন সকালে সম্প্রীতির এমনই ছবি দেখল দুর্গাপুর। শহরের ডিএসপি টাউনশিপের আকবর রোডের মাঠে ইস্কন কর্তৃপক্ষ জগন্নাথের রথযাত্রার মণ্ডপ তৈরি করছেন। সেখানেই এ দিন নমাজ পাঠের অনুষ্ঠান হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক বছর আকবর রোডের মাঠে বকরি ইদের নমাজ পড়ার ব্যবস্থা করে আকবর রোড ইদগাহ কমিটি। আগে সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ ময়দানেই করা হত জগন্নাথের ‘মাসির বাড়ি’। কিন্তু আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) সেই মাঠের ব্যবহার সীমিত করে দেওয়ায় গত দুই বছর আকবর রোডের মাঠেই জগন্নাথের ‘মাসির বাড়ির’ মণ্ডপ তৈরি হয়। টানা সাতদিন জগন্নাথ থাকেন মাঠের অস্থায়ী মন্দিরে। সেখানে মেলা বসে। দিনভর ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। ওই মাঠে ইতিমধ্যেই রথযাত্রা পালন উপলক্ষে নানা কাজের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। চলছে মণ্ডপ বাঁধার কাজ।
ইদগাহ কর্তৃপক্ষ ইস্কন কর্তাদের জানিয়েছিলেন, ওই মাঠেই প্রত্যেক বছর বকরি ইদের নমাজ পড়া হয়। ইস্কন কর্তৃপক্ষ নমাজ পড়ার সুবিধার জন্য দ্রুত মাঠে ত্রিপল টাঙানোর ব্যবস্থা করেন। এ দিন বৃষ্টিভেজা সকালে শামিয়ানার নীচে কয়েকশো মানুষ নমাজ পড়েন। কোলাকুলিতে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আকবর রোড ইদগাহ কমিটির পক্ষ থেকে হারুন আল রসিদ বলেন, “দুর্গাপুরের ইস্কন কর্তৃপক্ষ নমাজ পড়ার জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে মাথার উপরে ছাউনির ব্যবস্থা করে দেন। সকালে বৃষ্টির মধ্যেও আমাদের নমাজ পাঠ সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। ইস্কন কর্তৃপক্ষ আন্তরিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন। রথযাত্রা উৎসব যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সে বিষয়ে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
ইস্কনের প্রধান সেবায়েত ঔদার্য্যচন্দ্র দাস জানান, গত বছর উল্টো রথের পরে এই ইদ পড়েছিল। এ বার তিথি অনুযায়ী এ দিন ছিল ইদ। ইদগাহ কমিটির পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই মাঠে ইদের নমাজ পড়ার কথা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন আমাদের জানান। আমরা সাধ্যমতো বন্দোবস্ত করি। আমরা এ ভাবেই সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে চাই।” তিনি জানান, সকালে বৃষ্টির জন্য নমাজ পাঠ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে তাঁরা চিন্তায় ছিলেন। শেষ দিকে তিনি মাঠে গিয়ে দেখেন, সবই সুন্দর ভাবে হয়েছে। তিনি বলেন, “জগন্নাথ হলেন জগতের নাথ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে তিনি সবার। আমরা সে ভাবেই সবার সঙ্গে থেকে সেবার কাজ চালিয়ে যাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy