‘ভাঙচুরের’ পরে হাসপাতালের মেঝেতে কাচের টুকরো। নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর নালিশে আসানসোলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল মৃতের পরিজনেদের বিরুদ্ধে। ভাঙচুরের অভিযোগে তিন জনকে আটক করেছে আসানাসোল দক্ষিণ থানা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের সমস্যা নিয়ে ভর্তি করানো হয় বার্নপুরের ধরমপুরের বাসিন্দা সবরা খাতুনকে (৫৫)। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ পরিজনেরা হাসপাতালে আসার পরে তাঁদের সবরার মৃত্যুর কথা জানানো হয়। অভিযোগ, এর পরেই শুরু হয় ভাঙচুর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কী তাঁদের অভিযোগ, তা জানতে চাওয়া হলেও কর্ণপাত করেননি পরিজনেরা। উল্টে, বেশ কয়েকটি জানলার কাচ, চেয়ার, টেবিল-সহ অন্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে তাঁদের কাচের টুকরো দিয়ে আঘাত করা হয়। তিন জন নিরাপত্তারক্ষী রক্তাক্ত হন। জখম রক্ষী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাঙচুর চলছে দেখে ছুটে যাই। কিন্তু আমাদের কোনও কথা না শুনে রোগীর আত্মীয়েরা আমাদের উপরে চড়াও হন। কার্যত তাণ্ডব চালান ওঁরা।’’
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক রোগীর পরিজন বলেন, ‘‘নাগরিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া দরকার। এটা ভাবা দরকার, হাসপাতালে আরও নানা ধরনের রোগী রয়েছেন। অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতিও রয়েছে।’’ এ দিকে, পরিস্থিতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে তিন জনকে আটক করে।
কিন্তু কেন এমন ‘তাণ্ডব’?
মৃতের পরিবারের তরফে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবকের অভিযোগ, ‘‘আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়া, রোগীর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। সে জন্যই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একটা ফোন করে মৃত্যু-সংবাদ জানানোরও প্রয়োজন মনে করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’’ যদিও রাত পর্যন্ত রোগীর পরিজনদের তরফে স্বাস্থ্য দফতরে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
এ দিকে, মৃতের পরিবারের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির পরিচালন সংস্থার জিএম শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগীর পরিবার যে ফোন নম্বর দিয়েছিল, তাতে বার বার ফোন করা হয়। কিন্তু কেউ ফোন ধরেননি। এ দিকে, রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে পুলিশকে জানিয়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। কিন্তু এ দিন রোগীর হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।’’ সেই সঙ্গে, শুভব্রতবাবুর আরও দাবি, বৃহস্পতিবার চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের কথা পরিবারকে জানিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বা স্বাস্থ্যবিমা আছে কি না জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই আর কোনও জবাব মেলেনি পরিবারের লোকজনের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রোগীর পরিবারের লোকজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy