দুর্গাপুরে সমীক্ষা। নিজস্ব চিত্র ।
গত বছর দশেক ধরে দুর্গাপুর ব্যারাজে পক্ষী সমীক্ষা করছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ বার গত বারের চেয়ে ছয় প্রজাতির পাখি কম ধরা পড়েছে বলে সংস্থাটির দাবি। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার অন্যত্রও পাখি গণনায় পাখির সংখ্যা কমেছে। দূষণ, পাখি হত্যা-সহ আর কী কী কারণ রয়েছে এর পিছনে, তা খুঁজে বার করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দফতরের।
জানা গিয়েছে, নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য কর্নেল ল্যাব অব অর্নিথোলজি’ ১৯৯৮ সালে বিশ্ব জুড়ে চালু করে ‘গ্রেট ব্যাকইয়ার্ড বার্ড কাউন্ট’। উদ্দেশ্য, বুনো পাখির আসল সংখ্যা আশপাশে কত, কোন কোন প্রজাতির পাখি দেখা যাচ্ছে, কোন প্রজাতির পাখি আর তেমন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এ ধরনের নানা তথ্য সংগ্রহ করা ও সচেতনতা গড়ে তোলা। ২০১৫ সাল থেকে দুর্গাপুরে সেই কাজ করছে শহরেরই একটি বন্যপ্রাণপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির তৃতীয় রবিবার বিশ্ব জুড়ে পাখি গণনা চলে। বন দফতরের সহায়তায় দুর্গাপুর ব্যারাজে ওই সংস্থা সমীক্ষা করে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বার ৭৮ প্রজাতির পাখি নজরে এসেছিল ব্যারাজে। এ বার সেখানে ৭২ প্রজাতির দেখা মিলেছে। সারা দিনে মোট পাখি দেখা গিয়েছে ৮৮৮টি।
সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এ বছরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কাদাখোঁচা ও বুনো হাঁসের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় যে সব পাখি, যেমন জলমুরগি, চখাচখি, জিরিয়া, বুনো হাঁসের মতো দেখতে কুটপাখি, ‘পিয়ং হাস’ ইত্যাদি এ বার দেখা যায়নি। গত ৫ বছর ধরেই দেখা মিলছে না লিটল স্টিন্ট, উড স্যান্ডপাইপারের মতো পাখির। আবার ভাল খবরও রয়েছে। আগে টেমিঙ্ক স্টিন্ট ব্যারাজে অনেক দেখা যেত। গত দু’বছর একটিও দেখা মেলেনি। এ বার তাদের ফের দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ব্যারাজে প্রায় দু’বছর ধরে মেরামতির কাজ চলায় তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে শুভদীপ সাহা জানান, ব্যারাজের পাশে বাঁকুড়া জেলার দিকে একটি পার্ক নির্মাণের পরে ওই এলাকায় পরিযায়ী পাখি আসা অনেকখানি কমে গিয়েছে। কারণ, ওই পাখিদের স্বাভাবিক বাসস্থান হারিয়ে গিয়েছে। তাঁরা জানান, মূলত প্রতি বছর কত পাখি আসছে, কোন কোন প্রজাতির পাখি আসছে না, তা জানার পাশাপাশি নতুনদের পাখি পর্যবেক্ষণে উৎসাহিত করা, পাখি ও পাখিদের বাসস্থান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যেই প্রতি বছর এই পক্ষী সমীক্ষার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
দুর্গাপুরের বনাধিকারিক অনুপম রায় বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই প্রতি বছর পক্ষীগণনা করা হয়। এ বারও হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, কোথাও কিছু কম পাখি এসেছে। কোথাও হয়তো কিছু বেশি পাখি এসেছে। নজরদারি রয়েছে। যাতে কেউ পাখিদের বিরক্ত না করেন, সে জন্য ধারাবাহিক ভাবে মাইকে, পোস্টার-ব্যানার দেওয়া-সহ নানা ভাবে প্রচার করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy